পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পেশ করা হল ধর্ষণ বিরোধী নতুন বিল ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এই বিলটি পেশ করেন, যার লক্ষ্য নারীদের এবং শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। বিলটির মূল উদ্দেশ্য হলো ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের শিকারদের জন্য কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
বিলটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হলো, ধর্ষণের ফলে যদি নির্যাতিতা কোমায় চলে যান, তবে ধর্ষকের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এই সংশোধনীটি মুম্বইয়ের অরুণা শানবাগের ঘটনার স্মৃতি ফিরিয়ে আনে, যেখানে একজন নার্স নিজের কর্মস্থলেই ধর্ষিতা হয়ে প্রায় ৪০ বছর কোমায় ছিলেন, অথচ ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড হয়নি। এই নতুন বিধানের ফলে অরুণার মতো অনেক নির্যাতিতা ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিলের অন্যান্য প্রধান বিধানগুলির মধ্যে রয়েছে, ধর্ষণ করে খুনের ক্ষেত্রে আগের মতোই ফাঁসির সাজা বহাল রাখা এবং গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম শাস্তি হিসেবে আজীবন কারাবাস ও জরিমানা নির্ধারণ করা।
বিল পেশের আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বেশ কিছু সংশোধনী-সহ প্রস্তাব জমা দেন। বিধানসভায় আলোচনার সময় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শুভেন্দুর প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। আলোচনা চলাকালীন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর পরিবর্তে আমরা চাই এক্ষুনি শাস্তি দেওয়া হোক এবং আইনে পরিণত হোক।" এছাড়াও, তিনি পাকিস্তানের ডাক্তারদের মন্তব্য উল্লেখ করে বলেন, "এটি লজ্জার ব্যাপার।"
বিলটি নিয়ে আলোচনা চলাকালে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, অপরাধ সংক্রান্ত আইন যৌথ তালিকায় থাকার সুবিধা নিয়ে রাজ্য সরকার এই নতুন বিল আনছে। বিরোধী দলের সদস্যরাও বিলটির প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে বলেন, এটি একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যা নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।