রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের আটকে রাখা হচ্ছে বিনা কারণে। তবে কলকাতা হাইকোর্টে ওড়িশা সরকারের তরফে জানানো হল, সেই রাজ্যে একজন বাঙালি শ্রমিককেও গ্রেফতার করা হয়নি। আটক করা হয়েছিল মাত্র।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার শুনানি ছিল এই মামলার। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতিরা জানান, ওড়িশা সরকারের তরফে মুখে যে দাবি করা হয়েছে তা হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে। মামলার অন্য সব পক্ষও হলফনামা দিতে পারে। এই মাসের শেষ সপ্তাহে পরবর্তী শুনানি।
অভিযোগ ওঠে, পশ্চিমবঙ্গের অনেক পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করা হয়েছে ওড়িশায়। তা নিয়ে সরব হন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। বেছে বেছে বাঙালিদের আটক করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তারইমধ্যে ওড়িশা থেকে বেশ কয়েকজন শ্রমিকের রাজ্যে ফেরার খবর সামনে আসে। তবে সবাই ফুরেছেন কি না তা জানা যায়নি। এদিকে শ্রমিকদের একাধিক পরিবার মিলে হাইকোর্টে মামলা করে। সেই মামলারই শুনানি হয়।
আদালত এদিন ওড়িশা সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে জানতে চান, ওড়িশায় কেন বাঙালি শ্রমিকদের আটক করা হচ্ছে? এজি জানান, ওড়িশায় একজন বাঙালি শ্রমিককেও গ্রেফতার করা হয়নি। আটক করা হয়েছিল। নিয়ম মেনেই তা করা হয়েছে। ভারতের নাগরিক কি না জানতেই সেই পদক্ষেপ।
এই মামলার বিরোধী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ালন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ওড়িশার এজির কাছে প্রশ্ন করেন, 'কেন বেছে বেছে বাঙালি শ্রমিকদেরই আটক করা হচ্ছে?' এর উত্তরে ওই আইনজীবী বলেন, 'বাঙালিরাও আমাদের প্রতিবেশী। তাঁরা আমাদের ভাই-বন্ধু। এটা নিয়ে বিতর্ক হওয়া একেবারেই উচিত নয়। ওড়িশা সরকার বাঙালি বিদ্বেষী বয়। অনেক বাঙালি আমাদের ওখানে থাকে। তাতে আমাদের আপত্তি নেই।'
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হঠাৎ করে বাঙালিদের কেন বিদেশি ভাবা হচ্ছে? কীসের ভিত্তিতে তাঁদের আটক করা হচ্ছে? এর উত্তরে ওড়িশার এজি বলেন, 'কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সরকারের এমন কোনও লক্ষ্য নেই। ফরেনার অ্যাক্টে আটক মাত্র।' হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা জমা দেবে সেই রাজ্যের সরকার।