বাজল বর্ষার বিদায়ঘণ্টা। শীঘ্রই উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে বর্ষা বিদায় নিতে শুরু করবে। শুক্রবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর বিদায় শুরু হচ্ছে। সাধারণত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে বর্ষা সরে যেতে শুরু করে। তবে এ বার আরও আগেই বিদায় নিতে চলেছে। সাধারণত ১৫ অক্টোবরের মধ্যে দেশ থেকে পুরোপুরি বর্ষা সরে যায়।
এ বছর বর্ষার শুরু হয়েছিল সময়ের আগেই। ৮ জুলাই বর্ষা ঢুকে পড়ে গোটা দেশে, যা স্বাভাবিক সময়ের থেকে ৯ দিন আগে। ২০২০ সালের পর এই প্রথম এমন আগাম প্রবেশ ঘটে। ২৪ মে কেরলে বর্ষা ঢুকেছিল। সেটিও ছিল অস্বাভাবিক আগাম প্রবেশ। ২০০৯ সালের পর এই প্রথম এমনটা দেখা গেল। ২৬ জুনের মধ্যে সারা দেশই বর্ষার দখলে চলে গিয়েছিল।
চলতি বছর বর্ষার দাপটও অনেকটাই বেশি ছিল। দেশের গড় বৃষ্টিপাত এখনও পর্যন্ত ৮৩৬.২ মিমি। যেখানে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৭৭৮.৬ মিমি, অর্থাৎ, প্রায় ৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের কৃষি ও অর্থনীতির সঙ্গে বর্ষার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। দেশের প্রায় ৪২ শতাংশ মানুষ সরাসরি কৃষির ওপর নির্ভর করেন। জীবিকা নির্বাহ হয় চাষবাসের মাধ্যমে। দেশের জিডিপিতেও কৃষির অবদান ১৮.২ শতাংশ। ফলে বর্ষা বেশি বা কম হলে তা কৃষি এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
বাংলায় বর্ষা কবে বিদায় নেবে?
মৌসম ভবন জানিয়েছে, খুব শীঘ্রই বাংলাতেও বর্ষা বিদায়ের পালা শুরু হবে। তারিখ এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে গোটা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়েই সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি, এই পুরো সময়টা জুড়ে ধীরে ধীরে বর্ষা বিদায় নিতে পারে।
এ মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট অব্যাহত। শনিবার কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।
দক্ষিণবঙ্গে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও, সপ্তাহান্তে আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার এবং রবিবার বৃষ্টি কমবে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কোচবিহারে বৃষ্টি শনিবার পর্যন্ত চলবে।
ফলে দেশে আগেভাগেই বিদায় নিচ্ছে বর্ষা। বাংলাতেও সেই পালা শুরু হবে খুব শিগগিরই।