SIR সংক্রান্ত একটি পথসভাকে ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা।দুয়ারে ২০২৬ এর বিধানসভা ভোট। তার আগেই ফের প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের সুপ্রিমো বারবার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ভোটের আগে দলের মধ্যে কোনও অন্তর্দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু বাস্তবে সেই নির্দেশ যে কার্যকর হচ্ছে না, তারই প্রমাণ মিলল বীরভূমের পাড়ুইয়ে। SIR সংক্রান্ত একটি পথসভাকে ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূম জেলার পাড়ুই থানার সাত্তোর গ্রামে। সেখানে SIR সংক্রান্ত একটি পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা। সভা চলাকালীন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও, সভা শেষ হতেই অশান্তির সূত্রপাত বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সভা শেষ হওয়ার পর তৃণমূল নেতা হাফিজুল শেখকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতা বাবর আলীর অনুগামীরা। সেই কটাক্ষ ঘিরেই প্রথমে বচসা শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা হাতাহাতিতে গড়ায়। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই দুই গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা লাঠি, সোটা নিয়ে একে অপরের উপর চড়াও হয়। সংঘর্ষে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে পাড়ুই থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিছুক্ষণের চেষ্টায় উত্তেজনা প্রশমিত হলেও এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই দাবি প্রশাসনের।
যদিও এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এটি সম্পূর্ণ একটি গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক রং নেই। বিষয়টি প্রশাসন দেখছে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, দুই পক্ষই তৃণমূলের সক্রিয় নেতা-কর্মী এবং পুরনো বিবাদের জেরেই এই সংঘর্ষ।
এই ঘটনার পর দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কারা সংঘর্ষে জড়িত ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিধানসভা ভোটের মুখে এই ধরনের গোষ্ঠী সংঘর্ষ তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বারবার সতর্কবার্তার পরেও একের পর এক এলাকায় গোষ্ঠীকোন্দল সামনে আসায় ভোটের আগে শাসক শিবিরের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সংবাদদাতা: শান্তনু হাজরা