চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে কি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন দেব? এই নিয়ে জোর জল্পনা চলছে বঙ্গ রাজনীতিতে। আর যে তিনি ভোটে লড়তে চান না, তা একপ্রকার প্রকাশ্যেই বলেছেন টলিপাড়ার সুপারস্টার। এমন আবহে দেবের সঙ্গে শনিবার বৈঠকে বসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, শনিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের অফিসে বৈঠকে বসতে পারেন দেব।
সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি এবং বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দেব। তার পরেই দেবের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এর মধ্যেই বর্তমান লোকসভায় সাংসদ হিসাবে শেষ ভাষণ দেওয়ার সময় ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন দেব। দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরার পর দেব বলেছেন, 'দিদিকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি। আমার মনের কথা দিদিকে বলেছি। সত্যি জানি না ২০২৪ সালে কী হবে। আমি দাঁড়াব কি দাঁড়াব না, প্রশ্নের মুখে। নিশ্চয়ই আমার মাথার মধ্যে কিছু একটা চলছে। মিথ্যা বলব না। আমি হয়তো না-ও দাঁড়াতে পারি।' সংসদে ভাষণ দেওয়ার পর ঘাটালের সাংসদ লিখেছিলেন, 'সংসদে আমার শেষ দিন। ধন্যবাদ দিদি। ধন্যবাদ ঘাটালের মানুষকে।' দেবের এই বক্তব্য ঘিরে ক্রমেই জল্পনা দানা বেঁধেছে।
২০১৪ সালে প্রথম বার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে জোড়াফুল প্রতীকে লড়ে সাংসদ হয়েছিলেন দেব। তার পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও ঘাটল থেকে জয়ী হন তারকা সাংসদ। তবে রাজনীতিতে দেবের আসার সময় থেকেই চর্চা চলেছিল। রাজনীতিতে আসা নিয়ে সেই সময় দেবের অনিচ্ছার কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় দেব ভোটে লড়তে চান না বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। এবারও আলোচনায় দেব। যদিও দলীয় বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, লোকসভা ভোটে ঘাটাল থেকে দেবকেই প্রার্থী করতে চান তিনি। দলনেত্রীর নির্দেশ থাকলে তিনিও যে ভোটে লড়তে প্রস্তুত, সেই ইঙ্গিত অতীতে দিয়েছিলেন দেবও। তারপরে ঘাটালের ৩ সরকারি পদ থেকে আচমকা দেবের ইস্তফা এবং তার পর পরই সংসদে শেষ ভাষণ দেওয়া নিয়ে দেবের মন্তব্য এই পর্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
দেব প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'দেব তৃণমূলে ছিলেন, আছে, থাকবে।' দেব কি সাংসদ হিসাবে থাকবেন? এই প্রশ্নের জবাবে কুণাল বলেছেন, 'এখন সাংসদ হিসাবে রয়েছেন। আগামী দিনে কারা কারা প্রার্থী হবেন সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন। দল প্রার্থী ঘোষণা করবে।' অন্য দিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'দেবের সমস্যা দেবই বলতে পারবে। শুনেছি, উনি ভোটে দাঁড়াতে চান না। তবে ঘাটাল থেকে দাঁড়ালে হারাতে বাধ্য হব। ভাল ছেলে। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে হারাতে তো হবেই।'