মুর্শিদাবাদে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে আহত তৃণমূল নেতার মৃত্যু হল। পেশায় শিক্ষক আলতাফ আলি দীর্ঘদিন মুর্শিদাবাদ জেলার রানীনগর ১ নম্বর ব্লকের লোচনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। এই প্রাক্তন প্রধান গতকাল সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ হন। বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ তার মৃত্যু হয়।
বর্তমানে তৃণমূলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আলতাব আলি। মঙ্গলবার সন্ধেয় মুর্শিদাবাদের লালবাগ এলাকায় তাকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। নিহত তৃণমূল নেতার বাড়ি ইসলামপুর থানা এলাকার লোচনপুরে। তাঁর দুই মেয়ে লালবাগ এলাকায় পড়াশোনা করে। সেই সূত্রে লালবাগে যাতায়াত লেগেই থাকত আলতাবের। মঙ্গলবারও ইসলামপুর থানা এলাকার লোচনপুর থেকে লালবাগ যাওয়ার সময় মুর্শিদাবাদ থানা এলাকার আজমেরসারা এলাকায় একদল দুষ্কৃতী তাঁর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি বাইকে চেপে আসছিলেন, সেই সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
আহত ওই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তৃণমূল নেতার পেটে গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছিল। আজ ভোরেই তাঁর মৃত্যু হয়। কে বা কারা ওই তৃণমূল নেতাকে গুলি করে পালাল, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রসঙ্গত, ওই লোচনপুর পঞ্চায়েত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এক টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। লোচনপুর পঞ্চায়েতে মোট ১৭ জন সদস্য। গত বছরের মার্চে তাঁদের মধ্যে ৯ জন অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন প্রধানের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে সেই অনস্থা ভোটে অপসারিত হয় তৎকালীন প্রধান। তারপর থেকে প্রধানহীন অবস্থায় পড়ে ছিল লোচনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। শেষে হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান বাছাইয়ের দিনক্ষণ স্থির হয়। সেই মতো ১৭ সদস্যদের উপস্থিতিতে ভোটাভুটি হয়। প্রাক্তন প্রধান সিনারা বিবির বিরুদ্ধে ১১ জন সদস্য ভোট দেন। অনাস্থা ভোটে জিতে নতুন প্রধান হন সোনালি সিংহ রায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত তৃণমূল নেতাও নতুন প্রধানকেই সমর্থন করেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই বলেই দাবি করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।