নবনির্বাচিত দুই তৃণমূল বিধায়কের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে জটিলতা নিয়ে এ বার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতিকে এই নিয়ে চিঠি লিখেছেন বিধানসভার স্পিকার। শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস 'একবগ্গা' আচরণ করছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন স্পিকার।
শুধু রাষ্ট্রপতি নয়, উপরাষ্ট্রপতি তথা বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কেও এই নিয়ে চিঠি লিখেছেন বিমান।
সম্প্রতি বরানগরে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভগবানগোলা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন রায়াত হোসেন। সোমবার রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে সায়ন্তিকা জানান যে, রাজভবনে বিধায়ক পদে শপথ নিতে চান না তিনি। বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শপথ নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন সায়ন্তিকা। ২৬ জুন রাজভবনে এসে শপথগ্রহণ করার জন্য সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস।
অন্য দিকে, রাজভবনে শপথগ্রহণ করাতে চান রাজ্যপাল বোস। এই নিয়ে টানাপড়েনে বুধবার দুপুরে বিধানসভায় হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্নায় বসে পড়েন সায়ন্তিকা এবং রায়াত। রাজভবন সূত্রে খবর, বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত শপথের জন্য রাজভবনে অপেক্ষা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। তারপরে তিনি দিল্লি গিয়েছেন।
বুধবার বিধানসভায় রাজ্যপালের আসার অপেক্ষায় ছিলেন সায়ন্তিকা এবং রায়াত। তারপরেই তাঁরা বিধানসভার সামনে বসে পড়েন। বৃহস্পতিবারও বিধানসভা চত্বরে বি আর আম্বেদকরের মূর্তির নীচে ধর্নায় বসেন দুই হবু বিধায়ক।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয় যে, রাজভবনের সবুজ সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে না বলে ভোটে জিতেও শপথ নিতে পারছেন না সায়ন্তিকা এবং রায়াত। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হতেই ব্যক্তিগত ভাবে চিঠি পাঠিয়ে শপথ গ্রহণ করতে রাজভবনে আসতে বলা হয় সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে। তবে বিধানসভার স্পিকারকে এ নিয়ে কিছু জানায়নি রাজভবন। পরে বিধানসভার সচিবালয়ের কাছ থেকে বিধায়ক সংক্রান্ত কিছু তথ্য চেয়ে পাঠায় রাজভবন। তাতেই ক্ষুব্ধ হন স্পিকার। এরপরই চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপালকে সাংবিধানিক নিয়ম স্মরণ করান তিনি। সায়ন্তিকারাও চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে জানান যে, তাঁরা বিধানসভায় স্পিকারের কাছে শপথ নিতে চান। বিধায়কদের শপথগ্রহণ নিয়ে এহেন জটিলতা নতুন নয়। অতীতে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ ঘিরেও একই জটিলতা তৈরি হয়েছিল। শেষে রাজভবনে গিয়েই শপথ নিয়েছিলেন নির্মলচন্দ্র।