কোচবিহারের দিনহাটা থেকে আজ নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে আজ থেকে গ্রামে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের। টানা ২ মাস কলকাতার বাইরে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতেই কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেন অভিষেক। জনসংযোগের পর রাত তাঁবুতে কাটান তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড । জুনে সাগরে শেষ হবে কর্মসূচি।
সোমবার বিকেলে কোচবিহার পৌঁছে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশ সীমানা লাগোয়া কাঁটাতারের বেড়ার কয়েক হাত দূরত্বেই আজ সভা করবেন তৃণমূল সাংসদ। সীমানা লাগোয়া গ্রামেই রাত্রিবাস করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার উত্তরবঙ্গ রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "চলতি মাসের ২০ এপ্রিল সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলাম তৃণমূলের নব জোয়ার কোচবিহারের মাটি থেকে শুরু করতে চলেছি। তাই আজ দুপুর বেলা কোচবিহার যাচ্ছি। আজকে জাতীয় পঞ্চায়েত রাজ দিবস। খুব সম্ভবত ১৯৯৩ সালের ২৪ এপ্রিল ৭৩ নম্বর ধারা সংবিধানের আইন সংশোধন হয়েছিল ও তা কার্যকর হয়েছিল। কোচবিহার থেকে প্রচার অভিযান শুরু করব। প্রথমে আমি যাব কোচবিহার শহরে। সেখানে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে দিনহাটায় যাব।"
জানা যাচ্ছে আজ অভিষেকের প্রথম সভা দিনহাটার সাহেবগঞ্জে। এরপর সভা হবে সিতাইয়ের গোসাইমারি ও শীতলকুচিতেও। এদিকে অভিষেককে দেখার জন্য গতকাল রীতিমতো ভিড় জমে গিয়েছিল মদনমোহন মন্দির চত্বরে। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের নিরাশ করেননি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভিতর থেকেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে করমর্দন করেন অভিষেক। হাত তুলে নমস্কার করতেও দেখা যায় তাঁকে।
অভিষেকের এই ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিকে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করেছে বাম, বিজেপি, কংগ্রেস। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী অভিযোগ তুলেছেন, ১০০ কোটি টাকা খরচ করে এই কর্মসূচি করা হচ্ছে। পাল্টা কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, সিপিএমে ভেসে থাকতে চেয়ে সুজন চক্রবর্তী এ ধরনের কথা বলেন। "পুরোনো দিনে রাজা শিকারে যেতেন লোক লস্কর নিয়ে।সেরকমই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে জনসংযোগ যাত্রা হচ্ছে।” সোমবার ঠিক এই সুরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রাকে কটাক্ষ করেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।তিনি দাবি করেন সাধারণ মানুষ শাসক দল থেকে সরে যাচ্ছে। সেই কারণেই যাত্রার আড়ালে নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি দেখাচ্ছে শাসকদলের নেতা।
এবার জেলায় জেলায় ঘুরে গোপন ব্যালটে পঞ্চায়েতের প্রার্থী মনোনয়ন করবে তৃণমূল নেতৃত্ব। এই নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেন, “আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি গ্রাম বাংলার মতামত জানতে। আমার বুথে কে প্রার্থী হবে, আমি নিজে সেটা ঠিক করব। কোনও রাজনৈতিক নেতা নয়। কোনও বদ্ধঘরেও সে সিদ্ধান্ত হবে না। ভারতবর্ষে প্রথমবার সেই অধিকার বাংলার মানুষকে আমরা দিতে চাই। আগে ছিল নিজের ভোট নিজে দিন। এখন নিজের প্রার্থী নিজে বাছুন।”