তৃণমূল কংগ্রেসে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সাংগঠনিক কাঠামো আরও মজবুত করতে নতুন শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংসদ, বিধানসভা এবং দলের কার্যক্রমে দলীয় নীতি লঙ্ঘন হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নেতৃত্ব। তিনবার দলবিরোধী কার্যকলাপ প্রমাণিত হলে সদস্যপদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সোমবার বিকেলে একথা জানিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, সংসদ, বিধানসভা ও দলের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
নতুন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা হলেন-
সংসদীয় শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা:
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নাদিমুল হক
বিধানসভা শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা:
সুব্রত বক্সি, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ, সুজিত বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মলয় ঘটক।
দলের নতুন কর্মসূচি
তৃণমূল কংগ্রেস দলের ইতিহাস কর্মীদের মধ্যে আরও সুসংহত করতে জেলা স্তরে কর্মশালা আয়োজন করবে। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং নীতিমালা কার্যকর করতে কর্মীদের অবহিত করা হবে।
অপরাজিতা বিল নিয়ে কর্মসূচি
তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস ৩০ নভেম্বর ব্লক স্তরে অপরাজিতা বিলের সমর্থনে মিছিল করবে। বিকেল ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চলা এই মিছিলের মূল উদ্দেশ্য বিলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা। ১ ডিসেম্বর জায়গায় জায়গায় ধর্নার মাধ্যমে বিলটির প্রতি সমর্থন জানানো হবে।
বিভাগভিত্তিক নেতৃত্ব ও সমন্বয়
দিল্লিতে:
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, কীর্তি আজাদ, সুস্মিতা দেব, সাগরিকা ঘোষ।
উত্তরবঙ্গে:
গৌতম দেব, উদয়ন গুহ, প্রকাশ চিক বরাইক
ঝাড়গ্রামে:
বীরবাহা হাঁসদা
বাংলায়:
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়া, শশী পাঁজা, কুণাল ঘোষ
শৃঙ্খলা ও কর্মসূচির গুরুত্ব
তৃণমূল কংগ্রেসের এই নতুন পদক্ষেপ দলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কর্মীদের মধ্যে সংহতি বাড়াবে। অপরাজিতা বিলের প্রচারণা এবং শৃঙ্খলা রক্ষার নির্দেশ দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। এদিন বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাসভবনে বৈঠক হয়। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বছরে অন্তত দু’বার এই ধরনের বৈঠক ডাকতে হয়। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, এই বৈঠক শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার ছিল না।
নির্বাচনী সাফল্যের প্রভাব
শনিবার প্রকাশিত মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ফলাফল এবং পশ্চিমবঙ্গে ৬টি উপনির্বাচনে তৃণমূলের নিরঙ্কুশ জয় কালীঘাটে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। কংগ্রেসের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা মমতার প্রতি আঞ্চলিক দলগুলির নির্ভরতাকে আরও বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতার সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখার চেষ্টা করতে পারে, যাতে সংসদে কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয় করে মোদী সরকারের বিপদ না বাড়ে।
দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর বার্তা
তৃণমূলের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, যেখানে দলের নেতারা প্রকাশ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন এবং ক্ষমতার বিন্যাস নিয়ে মতামত দিয়েছেন, তা দলের শৃঙ্খলার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের বৈঠকে এই ধরনের নেতাদের প্রতি কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।