টানা ২০ দিন বৃষ্টিহীন দক্ষিণবঙ্গ। প্রবল তাপপ্রবাহে নাজেহাল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাই। তারই মধ্যে দহনজ্বালা বাড়িয়ে দিচ্ছে লোডশেডিং। আর লোডশেডিং না থাকলে ভোল্টেজের ওঠাপড়া লেগেই আছে। কলকাতা ও শহরতলির লোকজন জানাচ্ছেন, ১৯৭০-এর দশকে বিদ্যুতের ওঠানামা ঘন ঘন দেখা যেত। তখন বৈদ্যুতিক পণ্য এবং যন্ত্রপাতিগুলির ক্ষতি রোধ করতে ভোল্টেজ স্টেবিলাইজার ব্যবহার করতে হত। এখনও অনেকেই এসি ও ফ্রিজের জন্য স্টেবিলাইজার লাগান। কিন্তু এখনকার বহু এসি ও ফ্রিজ ইনবিল্ট স্টেবিলাইজার থাকে। তবুও বিভিন্ন গ্যাজেট নিয়ে মানুষ চিন্তিত।
বিদ্যুৎ দফতরের একজন ইঞ্জিনিয়ার জানালেন, যন্ত্রপাতির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অমূলক। ক্ষতি হয় ভোল্টেজ আচমকা বেড়ে গেলে। কিন্তু এখন তো ভোল্টেজ বাড়ছে না। কমে যাচ্ছে। আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। এতে খুব একটা ক্ষতির কোনও আশঙ্কা নেই। কোনও যন্ত্রপাতি খারাপ হবে না।
গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বরানগর, সিঁথি মোড়, যশোর রোড, নাগেরবাজার, দমদম, আগরপাড়া, লেকটাউন, বাঙ্গুর অ্যাভিনিউ, টালিগঞ্জ , বাঁশদ্রোনি, রানিকুঠি, যাদবপুর, গাঙ্গুলী বাগান, সন্তোষপুর, পাটুলি, পঞ্চায়েসার, সখের বাজার, পর্ণশ্রী এবং সরসুনা এলাকায় বিদুৎ বিভ্রাট চলছে। লোডশেডিং এবং ভোল্টেজের ওঠানামায় জেরবার বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, নতুন এসি নিতে চেয়ে বিদ্যুৎতের লোড বাড়াতে চেয়ে আবেদন এসেছে ৪৮ হাজার ৪০২টি। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৯ হাজার ৩৮৬ জন টাকাও মিটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতর অতিরিক্ত লোড দিতে পারছে না।
গরম পড়তেই বিদ্যুৎ দফতর যে জায়গাগুলির বিদ্যুৎতের লোড নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, সেগুলি হল- দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বারাসত, ব্যারাকপুর, শ্রীরামপুর, হাওড়া ও হুগলি। এমনকি দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো এলাকাতেও ৪৭ শতাংশ লোড বেড়েছে এই গরমে। তবে কম ভোল্টেজে ইলেট্রনিক্স যন্ত্রপাতির সমস্যা হয় না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। পর্ষদের ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, এখন বোরো চাষের মরসুম। যেকারণে বিদ্যুৎতের চাহিদাও বেড়েছে। চাষের মরসুমটা শেষ হলে ৪০০-৫০০ মেগাওয়াট লোড কমবে। তখন ভোল্টেজের ওঠানামা কমবে বলেই আশা করা হচ্ছে।