সন্দেশখালি যাওয়ার পথে দফায় দফায় বিক্ষোভের মুখে পড়ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শেষপর্যন্ত দুপুরে সেখানো পৌঁছন রাজ্যপাল। সেখানে ঢুকে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। ক'য়েকশ মহিলা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন রাজ্যাপালের। রাজ্যপাল সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে ঘিরে অভিযোগ শোনান মহিলারা। জানান হয়, মহিলাদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে সেখানে। শেখ শাহজাহান ও তাঁর দলবলের ভয়ে তাঁরা সিঁটিয়ে থাকেন। পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয় না। এরপর পুলিশ এই এলাকা ছেড়ে চলে গেলে তাঁদের ওপর নির্যাতন নেমে আসবে বলে আশঙ্কা সন্দেশখালির মহিলাদের।
সব শুনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মহিলাদের আশ্বস্ত করেন। বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করা উচিত, তিনি করবেন। সফর কাটছাঁট করে সোমবারই কেরল থেকে কলকাতায় ফিরে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন বোস। তার পর সেখান থেকে তিনি সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন। মালঞ্চের কাছে পৌঁছতেই রাজ্যপালের কনভয় ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মহিলারা। রাস্তার দু’পাশে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার হাতে ১০০ দিনের বকেয়া মেটানোর দাবি তোলেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিক্ষোভ করতে করতে রাজ্যপালের কনভয়ের সামনে চলে যান বিক্ষোভকারীরা। যার জেরে বোসের কনভয় থেমে যায়। মিনিট পাঁচেক রাস্তায় আটকেও ছিল কনভয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বেরোতে পারেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে পৌঁছে যান সন্দেশখালিতে।
এদিন সন্দেশখালিতে যেসব মহিলারা রাজ্যপালকে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগেরই মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। কোনও কারণে যে তাঁরা ভয়ে রয়েছেন, তা ফুটে উঠছিল স্পষ্ট। রাজ্যপালকে একটি লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে রাজ্যপালেক তরফে। রাজ্যপাল শান্তি ফেরাতে পদক্ষেপ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
এক মহিলা জানিয়েছেন, পুলিশ আমাদের কোনও কথা শোনে না। সবাই চলে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। ওদের বিরুদ্ধে বলেছি, ওরা তো ছাড়বে না। শেখ শাহজাহানের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছি।
এদিকে, সন্দেশখালিকাণ্ডে রাজ্যপাল বোসকে পদক্ষেপ করার জন্য শনিবার ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা ‘বেঁধে’ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজভবন জানিয়েছে, সম্প্রতি যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে সন্দেশখালিতে, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের থেকে সবিস্তার রিপোর্টও তলব করা হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনাবলি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনারেরও আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে রাজভবনের তরফে।