আদালতকে নিয়ে যাঁরা বিরূপ ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন তাঁদের আমরা সম্মান করি না। আদালত ও বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার প্রেক্ষিতেই সোমবার এমনটা বললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নাম না করেই এই মন্তব্য করেন বিচারপতি। তবে এর নিশানায় কে. তা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না কারও।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় SSKM-এ যান। সেখানে ভর্তি আহত তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর হাসপাতাল চত্বরেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেই সময়েই বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন অভিষেক।
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও প্রাথমিক নিয়োগে এক টেট-উত্তীর্ণকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি। সোমবার সেই মামলায় পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে আদালতে তলব করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নির্দেশমাফিক দুপুর ৩টেয় আসেন গৌতম পাল। শুনানি চলাকালীন পর্ষদ সভাপতির এক বক্তব্যের জবাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনারা অধ্যাপক – শিক্ষক আপনাদের আমরা সম্মান করি। কিন্তু যাঁরা আদালতকে নিয়ে বিরূপ ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন, তাঁদের আমরা সম্মান করি না। সুপ্রিমো কখনও এরকম মন্তব্য করেন না। তিনি অনেকবার আদালতে এসেছেন। আদালতে এলে বিচারপতিদের সঙ্গে কথা বলেন।'
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুপ্রিমো বলতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই বলেছেন বিচারপতি। অর্থাত্ তাঁর ভাল ব্যবহারের উদাহরণ দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিচারব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে অভিষেক বলেন, ‘এই তৃণমূল কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার জন্য বিচারপতি রাজশেখর মান্থা দায়ী। আমি নাম করে বলছি।’ অভিষেক বলেন, আমাদের ১৪ জন সহকর্মী বিজেপির সন্ত্রাসে আহত হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যেভাবে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে আক্রমণ করেছে বিজেপি তা নিন্দার। আমাদের ১৪জন আহত হয়েছেন, রাজ্যপাল খোঁজ নিয়েছেন?
এরপরেই বিচারপতি ও আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, 'বিজেপি করে বলে কি আইনের উপরে? বিচারপতি বা বিচারব্যবস্থা যদি ভাবে বিজেপিকে প্রোটেকশন দেব, হাতজোড় করে অনুরোধ, এমনটা করবেন না। যারা এইসব কাজ করছে বিচারব্যবস্থা তাদের প্রটেকশন দিয়ে রাখছে। সত্যি কথা বলার জন্য় যদি জেলে যেতে হয় যাব।'
এরপর নাম না করে অভিষেক বলেন, 'একজন বিচারপতি সবাইকে প্রোটেকশন দিয়ে দিচ্ছেন। কোনওদিন শুনেছেন কাউকে খুন করে, ধর্ষণ করলেও কিছু করতে পারবে না? এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এফআইআর করতে গেলেও অনুমতি লাগবে। যাদের জেলে থাকা উচিত তাদের মদত দিয়ে পুলিশের হাত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।'