২০২৩-এর প্রথম ঘূর্ণিঝড় মোকা তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে২০২৩-এর প্রথম ঘূর্ণিঝড় মোকা তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তা ক্রমে নিম্নচাপের রূপান্তরিত হবে, তারপরই শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকার রূপ নিয়ে ধেয়ে আসবে উপকূল অভিমুখে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। কাল সকালে এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বুধবারের মধ্যে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। মোকা-র পরোক্ষ প্রভাবে বাংলায় বাড়বে তাপমাত্রা। বুধবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ঝড় ও বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। মঙ্গল ও বুধবার কলকাতায় পারদ পৌঁছতে পারে ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে। তবে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই।
ঘূর্ণিঝড় মোকার অবস্থান
মোকার সম্ভাব্য গতিপথ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। তবে কোথায় আছড়ে পড়বে, কত গতিতে আছড়ে পড়বে, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয় বলেই জানিয়েছে মৌসম ভবন। তবে অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা কমছে। বাকি রয়েছে তামিলনাড়ু, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ। এই তিন রাজ্যের মধ্যে কোথায় আঘাত হানবে, তা নিয়েই আশঙ্কা বাড়ছে। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, মোকা আছড়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা পশ্চিমবঙ্গ কিংবা ওড়িশায়। আর ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়তে চলেছে নতুন সপ্তাহেই। তবে পশ্চিমবঙ্গ বা ওড়িশা যেখানে আছড়ে পড়ুক, মোকার প্রভাব কিন্তু আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যেও পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল এবং তামিলনাড়ুতে ভারী বৃষ্টি হবে।
কবে থেকে প্রভাব?
বঙ্গোপসাগরের উপর যে ঘূর্ণাবর্তটি সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাবে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হবে ৮ মে। তার পর সেটি ৯মে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ৯-১০ মের মধ্যে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। যে নিম্নচাপ অঞ্চলটি তৈরি হবে, তার প্রভাবে আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ৮-১১ মের মধ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। মৎস্যজীবীদের ৭মে-র মধ্যে ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ৬০-৯০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। কোথাও কোথাও সেটি ১০০ কিলোমিটার বেগেও পৌঁছতে পারে।
রাজ্যের আবহাওয়া বদল
রাজ্যের আবহাওয়া বদলের ইঙ্গিত দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফের চড়বে রাজ্যের তাপামাত্রা। কলকাতা সহ জেলার তাপমাত্রা ফের ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যে আবহাওয়ার বদল শুরু। অস্বস্তিকর গরম বাড়বে। যদিও রাজ্যের কয়েকটি জেলায় এরই মাঝে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আপাতত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। শুধু তাই নয়, কয়েক সপ্তাহ আগের স্মৃতিও ফিরতে চলেছে। কলকাতার তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করবে। তবে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় চলবে বৃষ্টি।
কেমন থাকবে কলকাতার আবহাওয়া?
কলকাতার আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা। মঙ্গলবার থেকে শুষ্ক আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাগুলিতে। শুধু তাই নয়. বুধবারের মধ্যে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নতুন সপ্তাহে কলকাতার তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করবে।
কেমন থাকবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া
আগামী ২৪ ঘণ্টায় পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তেমন ভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। আগামী সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমের শুকনো বাতাস বইতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। পশ্চিমের জেলাগুলি- বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে ফের একবার তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপপ্রবাহের কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা।
কেমন থাকবে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দার্জিলিং, কালিম্পং,আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় আগামী কয়েকদিন ঝড়বৃষ্টি চলবে। তবে দুই দিনাজপুর এবং মালদহে আপাতত বৃষ্টির কোনও সম্বাবনা নেই। ক্রমশ বাড়বে তাপমাত্রার পারদ।