scorecardresearch
 

West Bengal Anti-Rape Bill: ধর্ষণ রোধে 'অপরাজিতা বিল' সাংবিধানিকভাবে বৈধ, তবে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন; মত বিশেষজ্ঞদের

West Bengal anti-rape bill: আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। এমনই প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ রোধে আইন আনার ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার 'অপরাজিতা'(Aparajita Bill) নামের এই বিল বিধানসভায় পেশ হবে।  

Advertisement
Aparajita Bill: অপরাজিতা বিল নিয়ে যা-যা জানা জরুরি। Aparajita Bill: অপরাজিতা বিল নিয়ে যা-যা জানা জরুরি।
হাইলাইটস
  • আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।
  • এমনই প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ রোধে আইন আনার ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। 
  • মঙ্গলবার 'অপরাজিতা' নামের এই বিল বিধানসভায় পেশ হবে।  

West Bengal anti-rape bill: আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। এমনই প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ রোধে আইন আনার ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার 'অপরাজিতা'(Aparajita Bill) নামের এই বিল বিধানসভায় পেশ হবে।  

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংশোধনী আনার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সঠিক। তবে এর জন্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন।

অপরাজিতা

রাজ্য সরকার ধর্ষকদের দ্রুত মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে এই বিল আনবে। রাজ্যের মন্ত্রিসভা গত ২৮ অগাস্ট এই নতুন বিল আনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়।

সেই ২৮ অগাস্ট, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য সরকারের ক্ষমতা থাকলে ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষীর মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করত। 

তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকারের ক্ষমতা থাকলে আমরা ৭ দিনের মধ্যে চিকিৎসক হত্যায় অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতাম। আমরা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন শুরু করব।'

বিলের প্রধান বৈশিষ্ট্য

এই বিলে সব ধর্ষণের ঘটনাতেই দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি করা হয়েছে। ধর্ষণের মামলার বিচারও দ্রুত করা হবে। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।

নিয়ম

এই সংশোধনীতে যে শাস্তির কথা বলা হচ্ছে, তা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) এবং ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS)-র নয়া ফৌজদারি আইনে উল্লেখিত শাস্তির থেকে আলাদা। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫৪(২)-এর অধীনে এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সম্মতির প্রয়োজন হবে৷

অনুচ্ছেদ ২৫৪(২)-এর অধীনে সংবিধানের সমবর্তী তালিকার কোনও একটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় আইন আলাদা থাকলেও, কোনও রাজ্য তার থেকে ভিন্ন আইন তাদের আইনসভায় পাস করাতে পারে। তবে শর্ত আছে, এক্ষেত্রে রাজ্যের এই আইনে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাগে। তবেই সেটা বাস্তবায়িত হবে। এই আইন শুধুমাত্র সেই রাজ্যেই প্রযোজ্য হবে। 

আইনি বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে বলেন, 'ফৌজদারি আইন সমবর্তী তালিকার অংশ হওয়ায়, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার উভয়েই আইন প্রণয়ন করতে পারে।'

Advertisement

'তবে, যদি এই ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই একটি কেন্দ্রীয় আইন থাকে, তাহলে রাজ্য সরকার ২৫৪ ধারার অধীনে একটি সংশোধনী পাস করতে পারে। তারপর তার সম্মতির আর্জি করতে পারে,' জানান তিনি।

অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার নিজস্ব সংশোধনী পাস করতে পারে এবং সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারে। রাষ্ট্রপতি যদি রাজ্যের সংশোধনীতে তাঁর সম্মতি দেন, তাহলেই আর কোনও বাধা নেই।

রাষ্ট্রপতির সম্মতি দেওয়ার জন্য যদিও কোনও সময়সীমা নেই। সঞ্জয় ঘোষ বলেন, 'রাষ্ট্রপতি কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শে চলেন। তাঁর সম্মতি দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এছাড়াও, কোনও সময়সীমাও নেই।'

 সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড অশ্বানি দুবে বলেন, 'রাষ্ট্রপতির এই ধরনের সংশোধনী বিলে সম্মতি দেওয়া বাধ্যতামূলক কিনা তা সংবিধানে উল্লেখ করা নেই।'

অশ্বানি দুবের মতে, সংশোধনী আনার পদক্ষেপটি আইনত বৈধ। কিন্তু, বিশেষ বিধানসভা অধিবেশন ডাকার প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

'শুধুমাত্র রাজ্যপালের অধিবেশন আহ্বান করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে, রাজ্য সরকার নিজের মত করে অধিবেশন আহ্বান করেছে, যা একটি চ্যালেঞ্জযোগ্য বিষয়,' বলেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সত্যম সিং রাজপুত যদিও বলছেন, 'এই বিলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে, কারণ এটি ফৌজদারি আইনের আওতায় আসবে।'

'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রস্তাবিত বিলটি বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য যাচাই করবে। উপরন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার বিলে অনুমোদন দিলেও, সেটি আইনে পরিণত হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেতে হবে,' বলেন তিনি।

২০১৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে পাস করা 'দিশা বিল' এখনও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষাতে রয়েছে। সেটার উল্লেখ করে সত্যম সিং রাজপুত বলেন, 'পুরো প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে। আইনটি পর্যালোচনা করতে যতটা প্রয়োজন ততটাই সময় নিতে পারেন রাষ্ট্রপতি।'

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আবার এই ধর্ষণবিরোধী বিল আনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, 'আমি এই ধরনের একটি আইনের উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছি না। BNS এবং POCSO যথেষ্ট কার্যকরী। মানষুরে আচরণের যে ক্ষেত্রগুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, আইন প্রণয়নটা তার উত্তর নয়। কিন্তু যদি এটি করাও হয়, তাহলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন।'

Advertisement