বাইরন কংগ্রেসে কতদিন থাকবেন? মাস কয়েক বাদেই শিবির বদল করে ফেলবেন না তো! এই আশঙ্কার জবাবে সংবাদমাধ্যমকে বায়রন বিশ্বাস নিজেই বলেছিলেন, ‘লিখে রেখে দিন, তৃণমূল আমায় কিনতে পারবে না। দরকারে আমি তৃণমূলকে কিনে নেব।’ সেই বারনই 'সাগরদিঘি মডেলে' কার্যত জল ঢেলে শেষ পর্যন্ত তৃণমূলে যোগ দিলেন। জয়ের তিন মাসের মধ্যে জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিলেন তিনি। আজ, সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন বাইরন। বিধানসভায় কংগ্রেসের এক মাত্র বিধায়ক ছিলেন বাইরন।
বিষয়টিতে অধীর চৌধুরী বলেন, 'মানুষের রায় ছিল কংগ্রেসের পক্ষে। দিদি এবং খোকাবাবু মানুষের রায়কে পদাঘাত করে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। সাগরদিঘির হার তৃণমূল মেনে নিতে পারেনি। তাই তাকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া ছিল তৃণমূল। সমস্ত ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট ছিল, এই জয় তৃণমূল মেনে নেবে না। আর সেটাই হয়েছে।'
দলবদল নিয়ে বাইরনের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, ‘আরও বেশি মানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। সাগরদিঘির সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেই এই পদক্ষেপ। জলের পিছনে কংগ্রেসের ভূমিকা ছিল না।’
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বায়রন বিশ্বাসকে তৃণমূলে স্বাগত। আশা করি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বায়রন। কংগ্রেস-সিপিএম জোটে কাদের সুবিধা হয়েছে মানুষ দেখেছে। কংগ্রেস-সিপিএম জোটে বিজেপির লাভ হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজেপির হাত শক্তশালী করছে। বাংলায় তৃণমূলকে ভাঙতে চেয়েছে কংগ্রেস, তাতে কার হাত শক্ত হবে? রামধনু জোটের নির্যাস শূন্য। আমরা ভাঙার খেলায় বিশ্বাস করি না, গড়ার খেলায় বিশ্বাস করি।’
তবে বিষয়টিতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক, সুমন রায়চৌধুরী 'আজতক বাংলা'কে বললেন, 'সাগরদিঘি মডেল ফেল করেনি। ওখানকার মানুষ কংগ্রেসকে চেয়েছিল, তাই বায়রন জিতেছে। বায়রন বেইমানি করেছে। বায়রন বেইমান-গদ্দার। তবে সাগরদিঘি মডেল ফেল করেনি।'
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হয়েছিল সাগরদিঘি আসনটিতে। এর পর গত ২ মার্চ সাগরদিঘির ফল ঘোষণা হয়। ওই আসনে বামেদের সঙ্গে জোট গড়ে লড়াই করেছিল কংগ্রেস। তার ফলও পায় হাতশিবির। বাইরনের হাত ধরে সাগরদিঘি জয় করে কংগ্রেস। বলাইবাহুল্য বায়রনের তৃণমূলে যোগে জোর ধাক্কা খেল বাম এবং কংগ্রেসের জোট।
বিষয়টিতে সিপিএম নেতা ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য 'আজতক বাংলা'কে বলেন, 'উনি বিশ্বাসঘাতকতা করলেন সাগরদিঘির মানুষের সঙ্গে। এটা গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক ঝোঁক। ওঁর সদস্যপদ খারিজ করা হোক। এটা মানুষকে হতাশ করা। অমিত শাহের দেখানো পথে চলছে তৃণমূল। অমিত শাহ বিভিন্ন দল থেকে বিধায়ক কিনে সরকার গঠন করেন। বায়রন ভোটারদেরও অসম্মান করেছেন। জনাদেশকে উপেক্ষা করলে মানুষ এবং সংগঠনের রোষ থেকে বাঁচতে পারবে না।'