রাজ্যে ডেঙ্গি বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন মুখ্য সচিব। বৈঠকে জেলাশাসক, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (KMC) কমিশনার, সমস্ত জেলার চিফ মেডিকেল অফিসার (MOH) এবং নগরোন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক, পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন গ্রামোন্নয়ন (P&RD), গণপূর্ত বিভাগ (PWD) এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ (H&FW) দফতরের আধিকারিকরাও।
আলোচনার শেষে এদিন ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকা অনুযায়ী,
১) কাউন্সিলর সভা: জেলা শাসকদের অবিলম্বে ডেঙ্গি বাড়ছে এমন এলাকায় কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।
২) পরিচ্ছন্নতায় জোর: বিশেষজ্ঞদের সতর্কতার ভিত্তিতে চিহ্নিত হটস্পটে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে। আবর্জনা অপসারণ, নির্মীয়মান বিল্ডিংয়ে জল জমতে না দেওয়া, বন্ধ কারখানার প্রাঙ্গন সাফাই এবং খালি জমিতেও জোর দেওয়া হবে। কোথাও যাতে স্থির, জমা জল না থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে।
৩) রেল এবং মেট্রো: রেল এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে। তার জন্য তাদের অনুরোধ করা হবে।
৪) কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থা: কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থাগুলিকেও একই অনুরোধ করা হবে।
৫) বাজার-ঘাট: শহর এবং মফস্বল এলাকায় বাজারঘাট সাফ রাখার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
৬) পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রচার: পঞ্চায়েত সদস্যদের ডেঙ্গি প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রচার করতে হবে।
৭) আইনি ব্যবস্থা: কোনও স্থানে, জমি মালিক ডেঙ্গি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা মেনে চলতে ব্যর্থ সম্পত্তির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৮) হাসপাতাল চত্বর: হাসপাতাল চত্বরে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে।
৯) ডেঙ্গি কেস ম্যানেজমেন্ট: জেলার পর্যবেক্ষক দলদের ডেঙ্গি কেসের বিষয়ে সবসময়ে আপডেটেড থাকতে হবে। বেসরকারি এবং সরকারি, উভয় চিকিৎসা কেন্দ্রেই নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে।
১০) প্রাইভেট ক্লিনিকের জন্যও নিয়ম: সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি কেস ম্যানেজমেন্টের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
১১) স্যানিটেশনে জোর: স্যানিটেশন এবং ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হবে।
১২) প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে সচেতনতার প্রসার: সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানো হবে। প্লাস্টিক থেকে ড্রেন ব্লক হয়। আর সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত
১৩) মশারি বিতরণ: মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য বস্তি এবং হটস্পট এলাকায় মশারি বিতরণ করতে হবে।
১৪) ফিভার ক্লিনিক: জ্বর মোকাবিলায় বিশেষ ক্লিনিক এবং সরকারি ফেসিলিটিতে দ্রুত ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
১৫) অফিসিয়াল ছুটি বাতিল: পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত আধিকারিক এবং কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হবে।