রাজ্য বনাম রাজভবনের সংঘাতের সুর আরও চড়ল। এবার রাজ্যের অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বোস বলেছেন, 'সব সীমা লঙ্ঘন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
ঠিক কী বলেছেন রাজ্যপাল?
শনিবার দিল্লিতে রাজ্যপাল বলেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গ যেভাবে আর্থিক ভাঙনের মুখে তা দেখতে খুবই খারাপ লাগছে...।' এরপরেই রাজ্যপাল বলেছেন, 'ভারতীয় সংবিধানের ১৬৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক করার কথা বলছি এবং রাজ্যের আর্থিক বিষয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক।'
শনিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস। তারপরেই রাজভবনের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে বাংলায় অর্থনৈতিক ভাঙন শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। তারপরেই এই মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।
অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে এবার আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন রাজ্যপাল। মমতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করবেন বলে শনিবার জানিয়েছেন বোস। বলেছেন, 'সব সীমা পার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল আরও বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ওঁকে সম্মান করি। কিন্তু উনি মনে করেন, যে কাউকে ধমক দেবেন...মিথ্যাচার করে কারও সম্মানহানি করার অধিকার নেই ওঁর।'
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সেই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছিলেন রাজ্যপাল। সেই ঘটনায় রাজ্যপালকে বারংবার নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি নবান্ন সভাঘরে সরকারি বৈঠকে রাজভবন নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেছিলেন, 'রাজভবনে যা কীর্তিকলাপ চলছে, মেয়েরা সেখানে যেতে ভয় পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আমার কাছে।'
অন্য দিকে, তৃণমূলের দুই হবু বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেনের শপথগ্রহণ নিয়ে টানাপড়েন চলছে। সায়ন্তিকাদের শপথ অনুষ্ঠান রাজভবনে করাতে চান রাজ্যপাল। আর সায়ন্তিকারা চান বিধানসভায় শপথ অনুষ্ঠান হোক। এই নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করার যে কথা বললেন রাজ্যপাল, তাতে রাজ্য বনাম রাজভবন সংঘাত নয়া মাত্রা পেল বলেই মনে করা হচ্ছে।