Potato Price: আলুর দাম তলানিতে, আম আদমির 'পৌষমাস', চাষিদের 'সর্বনাশ', কী হবে?

আলু চাষ করে বিরাট ক্ষতির মুখে বাংলার কৃষকরা। ১ মার্চ থেকে রাজ্যের সমস্ত কোল্ডস্টোর খুলে গিয়েছে। তারপরেই জমিতে আলুর দাম কম থাকায় সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা। এবার আলুর ফলন ভালই হবে বলেই মনে করছেন কৃষক থেকে ব্যবসায়ীরা। আলুর বাজারে একটা কথা চালু আছে। সেটা হল ফলন ভাল হলে দাম হবে না।

Advertisement
আলুর দাম তলানিতে, আম আদমির 'পৌষমাস', চাষিদের 'সর্বনাশ', কী হবে?আলুর দাম তলানিতে, আম আদমির 'পৌষমাস', চাষিদের 'সর্বনাশ', কী হবে?
হাইলাইটস
  • ১ মার্চ থেকে রাজ্যের সমস্ত কোল্ডস্টোর খুলে গিয়েছে
  • সরকার চাষিদের থেকে বস্তা প্রতি ৪৫০ টাকা দামে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে

আলু চাষ করে বিরাট ক্ষতির মুখে বাংলার কৃষকরা। ১ মার্চ থেকে রাজ্যের সমস্ত কোল্ডস্টোর খুলে গিয়েছে। তারপরেই জমিতে আলুর দাম কম থাকায় সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা। এবার আলুর ফলন ভালই হবে বলেই মনে করছেন কৃষক থেকে ব্যবসায়ীরা। আলুর বাজারে একটা কথা চালু আছে। সেটা হল ফলন ভাল হলে দাম হবে না। ফলন কম হলেই দাম পাওয়া যায়। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে এবার আলুর ফল ভাল হবে। বিঘে প্রতি ১০০ থেকে ১৪০ বস্তা আলু হচ্ছে কোথাও কোথাও। যার কারণে দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা। লোকসানের ভয়ে আলু কেনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ারীও।

বাংলার হুগলি,বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিপুল পরিমাণে আলুর চাষ হয়। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় আলু চাষ হয়। সব জেলাতেই আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকার চাষিদের থেকে বস্তা প্রতি ৪৫০ টাকা দামে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে। তাতে কোনও লাভ হবে না। কারণ চাষি প্রতি মাত্র ৭০ বস্তা করে আলু বিক্রি করা যাবে সরকারকে। বাকি আলু বিক্রি করতে হবে বা হিমঘরে রাখতে হবে। যদিও চাষিরা জানাচ্ছেন, আলু বিক্রি করে চাষের খরচও উঠছে না। দাম না বাড়লে বহু আলু চাষির অনেক টাকা লোকসান হবে। কারণ, চাষিরা কেজি প্রতি ৮ টাকা দাম বা বস্তা পিছু ৪০০ টাকাও পাচ্ছেন না। অনেক জায়গায় ৩৫০ টাকা আলুর দাম নেমে গিয়েছে। হিমঘরে আলু রেখেও যে পরে দাম মিলবে, এমন নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরাও।

চাষিদের দাবি, এবার প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এখন আলুর যা দাম তাতে প্রতি বিঘার চাষের খরচ টেনেটুনে উঠে গেলেও লাভ হবে না। বেশিরভাগ চাষিই সমবায়ের ঋণ, কেউ ব্যাঙ্কের ঋণ, আবার কেউ চড়াসুদে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। কিন্তু দামের কারণে তাঁদের লোকসান হবে। ধারের টাকা মেটাতেই সব চলে যাবে।  চাষিদের অভিযোগ করছেন, গতবার আলুর দাম বাড়ার পরে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে নেমেছিল। অন্য রাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ করেছিল। সেই সিদ্ধান্তের কারণেই ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছিলেন। অনেক টাকা অনাদায়ি হয়ে রয়েছে। যার করাণে এবার কিছুটা হলেও তাঁরা মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন। আর তার ফলেই চাষিরা আলুর সঠিক দাম পাচ্ছেন না।

Advertisement

পকেট পার্টিরাও এবার লোকসানের ভয়ে আলু কিনছেন না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, আলু কিনে যদি লাভ না হয় তাহলে পকেট পার্টিরা কিনবেন কেন? সরকার কেজি প্রতি ৯ টাকা দরে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে। যদিও তার বাস্তবায়ন চোখে পড়ছে না। কলকাতার বাসিন্দাদের কম দামে আলু খাওয়াতে হবে, তাই সরকারের এই সিদ্ধান্ত। তাতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য উপদেষ্টা বিভাস দে বলেন, 'বিঘে প্রতি ১০০-র উপরে আলু হচ্ছে। কিছু জাতের আলুর ফলন আরও বেশি। ফলন বেশি হলে দাম সাধারণত মেলে না। বৃষ্টিতেও খুবই কম ক্ষতি হয়েছে চাষে, তাও মাত্র কয়েকটি জেলার কিছু এলাকায়। তাতে আলুর ফলনে বিরাট কিছু প্রভাব পড়েনি।'

আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, আলুর বাম্পার ফলন হচ্ছে এবার। চাষিরা মাঠে খুব বেশি দাম পাবেন না বলেই মনে হচ্ছে। আর দাম না পেলে আলু স্টোরে রাখবেন। সেখানে অল্প কিছু লাভ হতে পারে। পকেট পার্টিরা আলু কিনছে না। সেই কারণেই দাম নেই। গতবার সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণেই এবার তাঁরা রিস্ক নিতে চাইছেন না।'

TAGS:
POST A COMMENT
Advertisement