মঙ্গলবার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক এবং সমন্বয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পুজো উদ্যোক্তাদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা-ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারই মাঝে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে CBI-ED ব্যবহার করার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুজো কমিটিগুলিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কোথাও যেন কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। কারণ, সংবাদমাধ্যমও পুজোয় সক্রিয়। ওরাও অংশগ্রহণ করে, পুজোকে ভাল করে দেখায়। ওদের ধন্যবাদ। ওদের আমি দোষ দিই না। তবে বাংলায় সমস্যা কী জানেন তো? ওদের মালিকরা আবার ব্যবসার পাশাপাশি, পাছে ইডি ধরে, সিবিআই ধরে, একটা পিঁপড়ে কামড়ালেও ওরা সেটা নিয়েই সারাদিন দেখায়। ভালটা দেখায় না।'
'আমাদের বাড়িতে রোজই ওরা অত্যাচার করছে'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের বাড়িতে রোজই ওরা অত্যাচার করছে। কালকেও সারারাত, আমি আইনজীবীর থেকে জেনেছি... না জানিয়ে হঠাৎ ছেলেটা পরশু দিন ফিরেছে, হঠাৎ করে চলে গিয়েছে তার চার-পাঁচটি জায়গায়। সকাল ৬টায় আমি খবর পেলাম যে বাবুরা বেরিয়েছে।'
প্রসঙ্গত সম্প্রতি মার্কিন মুলুক থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফিরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরপরই তাঁর দফতরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা অভিযান চালান।
'কোনও সাক্ষী রাখছে না'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ধরুন আমার বাড়িতে কেউ গেল, বা আমি আপনার বাড়িতে পুলিশ পাঠালাম, নিয়ম কী? একটা ওয়ারেন্ট থাকবে। অথবা বাড়ির লোককে জানাবে, কথা বলবে। রেইড করলে বাড়ির অন্যরা থাকবে। অনেকে আছে ধরুন ইংরাজি ভাল জানে না বা ভাল ড্রাফট করতে পারে না। তাঁরা আইনজীবীদের সাহায্য নেন। তুমি একটা জায়গায় যাচ্ছ রেইড করতে, তালা ভেঙে ঢুকছ। জানাচ্ছ না। বাড়ি বন্ধ থাকলে তালা ভেঙে ঢুকে যাচ্ছে। সেখানে একটি চা করার লোক থাকলেও তাকেও বের করে দিচ্ছে। কোনও সাক্ষী রাখছে না।'
তিনি দাবি করেন, 'ধরুন আমার বাড়ি গেল, আমাকে জানাল না। সবারই তো একটি নিরাপত্তা আছে। তুমি যে একটি বিস্ফোরক, বন্দুক রেখে যাচ্ছ না, সেই গ্যারান্টি কে দেবে? তুমি যে নিজে কয়েক কোটি টাকা বাক্সে করে নিয়ে ঢুকছ না, সেই প্রমাণ কোথায়?'
মমতার দাবি, এটি আইনি নয়, বেআইনিভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা হচ্ছে।
তবে এরপর মুখ্যমন্ত্রী এটিও বলেন যে, 'আমি আমার কথা বলছি না। হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে ওরা যায়নি, বাজে কথা বলে লাভ নেই। ওরা একটি কাগজ লিখেছে আরও উস্কে দেওয়ার জন্য। গেলে যাবে। কালী মন্দিরেও যেতে পারে, দক্ষিণেশ্বরেও যেতে পারে, নাখোদা মসজিদেও যেতে পারে, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে কে কাকে বিয়ে করেছে, কার কোথায় জন্ম, কার বাড়িতে কী বাজার হয়েছে, কে কী খাচ্ছে, তাই দিয়ে দেশ চলতে পারে না।'
প্রধানমন্ত্রীর তুলোধনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বাইরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বড় বড় কথা বলছেন। সবাইকে নিয়ে চলার বার্তা দেন। কিন্তু বিরোধী রাজ্যগুলিতে দেখুন। পিঁপড়ের মতো কামড়াচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'দুর্গাপুজোকেও ছাড়ছে না। সেখানেও আয়কর তুলতে গিয়েছিল।'