কলকাতার শীতল আবহাওয়ায় রবিবার এক ধাক্কায় তাপমাত্রা আরও কমল। গত কয়েক দিন ধরে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮ থেকে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঘোরাফেরা করছিল। রবিবার সকালে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শহরের পারদ নেমে এসেছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করেছে। ঝাড়গ্রামের মতো দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো শীতলতায় উত্তরবঙ্গের কালিম্পংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। রবিবার ঝাড়গ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যদিও উত্তরবঙ্গের শীতল আবহাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা, দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রার এই পতন শীতপ্রেমীদের জন্য বিশেষ আনন্দের। তবে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে দক্ষিণবঙ্গ বা কলকাতার তাপমাত্রায় বড় কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
শীতের মরশুমে প্রথমবারের মতো কলকাতার তাপমাত্রা নেমে এলো ১৮ ডিগ্রির নিচে। আলিপুরে এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর দমদমে তাপমাত্রা নেমেছে ১৬.৬ ডিগ্রিতে। পশ্চিমাঞ্চলের জেলা পুরুলিয়া দিল্লির মতো ঠান্ডায় ঢেকে গেছে, যেখানে তাপমাত্রা পৌঁছেছে ১২ ডিগ্রিতে। শ্রীনিকেতনে তাপমাত্রা নেমেছে ১২.৫ ডিগ্রিতে, যা রাজ্যের শীতলতম স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কলকাতায় শীতের এই মনোরম আবহাওয়া আগামী সপ্তাহ ধরে স্থায়ী হবে। তবে নতুন করে তাপমাত্রা নামার সম্ভাবনা আপাতত নেই। আগামী চার থেকে পাঁচ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮-১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ রয়েছে ৪৪ থেকে ৯৫ শতাংশের মধ্যে, যা শীতের অনুভূতিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশার চিত্র দেখা যাচ্ছে। দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর এবং মালদহ জেলায় সকালে কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং ও দুই দিনাজপুরে মাঝারি কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে এই নিম্নচাপের প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি তামিলনাড়ু ও শ্রীলঙ্কা উপকূলের দিকে সরবে। তবে এর ফলে আন্দামান ও দক্ষিণ ভারতের কিছু অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
এই শীতল আবহাওয়া রাজ্যবাসীকে শীতের প্রথম স্বাদ এনে দিয়েছে। যদিও শীতের তীব্রতা আপাতত স্থিতিশীল থাকবে বলে জানা গেছে, তবু উত্তরবঙ্গের কুয়াশা এবং পশ্চিমাঞ্চলের ঠান্ডা আবহাওয়া শীতের উৎসবমুখর আবহে আরও রঙিন করবে।