scorecardresearch
 

টানেলে ধস : অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সেবক-রংপো রেলপথের কাজ

টানেলে ধসের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে গেল বাংলা-সিকিম রেলপথের কাজ। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত এই টানেলটিতে বৃহস্পতিবারই ধস নেমে দুজনের মৃত্যু হয়। তারপর ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে রেলের তরফে। ঠিকাদার সংস্থার তরফে কোনও গাফিলতি আছে কি না, কিংবা গাইডলাইন মেনে কাজ করা হচ্ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখবে রেল। তারপরই ফের কাজ শুরু হতে পারে।

Advertisement
সেবক রংপো রেলপথের টানেল সেবক রংপো রেলপথের টানেল
হাইলাইটস
  • সেবক রংপো রেলপথের কাজ আপাতত বন্ধ
  • তদন্ত শেষ হলেই ফের কাজ শুরু হতে পারে
  • পরিবেশপ্রেমীদের ক্ষোভ বাড়ছে

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেলপথের কাজ

টানেলে ধসের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে গেল বাংলা-সিকিম রেলপথের কাজ। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত এই টানেলটিতে বৃহস্পতিবারই ধস নেমে দুজনের মৃত্যু হয়। তারপর ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে রেলের তরফে। ঠিকাদার সংস্থার তরফে কোনও গাফিলতি আছে কি না, কিংবা গাইডলাইন মেনে কাজ করা হচ্ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখবে রেল। তারপরই ফের কাজ শুরু হতে পারে।

বৃহস্পতিবার আচমকা ধসে বিপত্তি দেখা দেয়

শিলিগুড়ি-সিকিম (সেবক থেকে রংপো)  প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের প্রায় ৮৫ শতাংশই এই রাজ্য়ের মধ্যে পড়ে। বৃহস্পতিবার কালিম্পংয়ের ভালুখোলাতে সেবক- রংপো রেল লাইনে টানেল তৈরির সময় কাজ চলাকালীন রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ টানেলের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি পড়ছিল। ওই সম ভিতরে থাকা ৭ জন শ্রমিক মাটি-পাথরের স্তুপের মধ্যে আটকা পড়ে যায়। পরে কালিম্পং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ২ জন মারা যান। আহত ৫ জনের মধ্যে গুরুতর জখম দুজনকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাকিরা বিপন্মুক্ত বলে জানা গিয়েছে।

নতুন করে বিতর্ক

সেবক রংপো রেলপথ নিয়ে এর আগে কম জল ঘোলা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে টানেল ধসে দুজনের মৃত্যু এবং পাঁচজন জখম হওয়ার ঘটনার পর ফের নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে।

প্রকল্পের প্রস্তাব বহুদিনের

এর আগে ২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার এই রেলপথ স্থাপনের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তারপর দীর্ঘ বছর কোনও পদক্ষেপ হয়নি। অবশেষে ২০১৬ সালে এ নিয়ে নতুন করে উদ্যোগ শুরু হয়। ২০১৯ সাল থেকে কাজ শুরু হয়। সেবক থেকে সরাসরি সিকিমের রংপো পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন শুরু হয়। পাহাড়ি দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে পাহাড়ের ভিতর দিয়ে টানেল তৈরি করে রেলপথ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

প্রাথমিকভাবে ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল

প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছিল ২০২১ সালের মধ্যে এই প্রকল্পটির শেষ করা হবে। পরবর্তীতে বিভিন্ন রকম বাধা-বিপত্তি, বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং জমিজট কাটিয়ে কাজ শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে রেললাইনে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়।

নতুন করে ২০২০ সালে কাজ শুরু হয়

২০২০ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করে রেল প্রকল্পের কাজ জোরকদমে শুরু হয়। মাঝে করোনার কারণে প্রায় ছ মাস বন্ধ ছিল। রেলের তরফে দাবি করা হয়েছিল, যেহেতু রেলপথের ৯২ শতাংশ মাটির নিচ দিয়ে যাবে, ফলে অরণ্য, প্রাণী বা পরিবেশের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

পরিবেশপ্রেমীদের বিরোধ

যদিও এই দাবি ঠিক নয় বলে বরাবরই এলাকাবাসী এবং পরিবেশপ্রেমীরা বিক্ষোভ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এদিনের ধসের ফলে দু'জনের মৃত্যু এবং জখম হওয়ার ঘটনায় ফের তাদের দাবি জোরালো হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই তারা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়ে পিটিশন দায়ের করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে নতুন করে এই রেলপথকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হলে কাজ থমকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

Advertisement