মাস খানেক হল সেনার দখলে রয়েছে মায়ানমার। বন্দি নেত্রী আং সান সুকি-সহ শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা। সেনার হাতে বন্দি খোদ রাষ্ট্রপতিও। বিচ্ছিন্ন সমগ্র যোগাযোগ ব্যবস্থা।

একবছরের জন্য গোটা দেশে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই গর্জে উঠেছেন মায়ানমারের সাধারণ মানুষ। সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশ অসহযোগ আন্দোলন চালাচ্ছেন।

গণতন্ত্রকামীদের দাবি, আং সাং সুকি-সহ গৃহবন্দি সব নেতানেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক সরকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতেও চলছে আন্দোলন।
এদিকে বিক্ষোভ দমনে কঠোর নীতি নিয়েছে সেনা। গত রবিবারই মৃত্যু হয়েছিল ১৮ জন আন্দোলনকারী। চলতি সেনা অভ্যুত্থানে সেটাই ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। তাতে অবশ্য দমেনি জনতা। ফের পথে নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। শান্তি ফেরানোর নামে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

নতুন করে মিছিল-বিক্ষোভে অবরুদ্ধ রাজধানী ইয়াঙ্গন সহ দেশের অন্যান্য শহর। পথে নেমেছেন ডাক্তার, শিক্ষক, বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরাও।

বুধবার চরম নৃশংসতার সাক্ষী থাকল আন সাং সুকির দেশ। একদিনে ৩৮ গণতন্ত্রকামী মানুষকে গুলি করে মারল সেনা ও পুলিশ। সেনার বর্বরোচিত আচরণে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব।

মূলত তিনটি শহর থেকে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর খবর এসেছে। সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন মনিওয়া শহরে। ছবির মতো এই শহরে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। ম্যান্ডালে, রাজধানী ইয়াঙ্গনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বেধেছে সেনা-পুলিশের।
১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পাল্টা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছেন। কিন্তু আন সাং সুকি পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। সেই উদ্দেশে নির্বিচারে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তারা।

দেশে যাতে প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে না পড়ে তাই দেশজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশও টেনেছিল সেনা। কিন্তু তারপরেও থামেনি মানুষের বিক্ষোভ। দিকে দিকে আং সান সুকির মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ।