কোথায় প্রতিবাদী মালালা? কেন শোনা যাচ্ছে না তার কণ্ঠস্বর ? তালিবানরা আফগানিস্তানের একের পর এক প্রদেশ যখন দখল করে নিচ্ছে, সেই সময় নোবেল শান্তি সম্মানে ভূষিত মালালা আশ্চর্যজনকভাবে চুপ। তার এই ভূমিকায় স্তম্ভিত ছিল গোটা বিশ্ব।
কিশোর বয়স থেকে মালালা ছিল প্রতিবাদী। আফগানিস্তানে তালিবানদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে তাকে বহুবার সোচ্চার হতে দেখা যায়। যে কারণে তালিবানদের বন্দুকের নিশানা হয়ে উঠেছিল মালালা। হামলাও হয়। প্রায় ভাগ্য়ের জোরে বেঁচে গিয়েছিলেন মালালা ইউসুফজাই। কিন্তু তারপরেও তাকে থামানো যায়নি। তালিবানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মেয়েদের নারী শিক্ষা বিস্তারের ওপর জোর দিয়েছিলে। চেয়েছিলেন আফগানিস্তানে ফিরুক বসন্ত।
বসন্ত ফিরেছিল ঠিকই। কিন্তু তার স্থায়ীত্ব ছিল খুব কম সময়। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা সরাতেই তালিবান জঙ্গিরা দাঁত-নখ বের করে হামলা চালাতে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত আড়াই লক্ষ মানুষ গৃহহীন। তালিবানদের বন্দুকের নল বন্ধ করে দিয়েছে বহু শিশুদের বুকের ধুকপুকানি।
তবে কাবুলের দখল তালিবানদের হাতে জেতেই অবশেষে মুখ খুললেন মালালা। আফগানিস্তানে মেয়েদের নিরাপত্তা, মানবাধিকাররক্ষাকর্মী এবং সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র ভাবে চিন্তিত সমমাজকর্মী নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাই।
কাবুলে তালিবানদের প্রবেশ এবং প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি সরে দাঁড়ানোর পরই আফগানিস্তান নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মালালা। এ বিষয়ে তিনি ট্যুইট করেছেন। ট্যুইটে লিখেছেন---'তালিবানের এই আফগানিস্তান দখল অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে দেখতে হল। আমি সেখানকার মহিলা, সংখ্যালঘু এবং মানবাধিকারকর্মীদের নিয়ে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্বের সমস্ত শক্তির কাছে আমার আবেদন, তারা সকলে যেন একযোগে আফগানিস্তানে যুদ্ধশান্তির চেষ্টা করে এবং সে দেশের সাধারণ মানুষ ও উদ্বাস্তুদের যেন সব রকমের মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেয়।'
We watch in complete shock as Taliban takes control of Afghanistan. I am deeply worried about women, minorities and human rights advocates. Global, regional and local powers must call for an immediate ceasefire, provide urgent humanitarian aid and protect refugees and civilians.
— Malala (@Malala) August 15, 2021
এদিকে তালিবানরা কাবুলে প্রবেশ করতেই আফগানিস্তান সরকারের পতন হয়ে গিয়েছে। ইতোমধ্যে কাবুলের এআরজি প্রেসিডেন্ট প্যালেসের দখল নিয়ে নিয়েছে তালিবানরা। ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
পদত্যাগ করেই আফগানিস্তান ছেড়েছেন আশরফ গনি। রবিবার সকালে দক্ষিণের জালালাবাদ দখল নেওয়ার পর দুপুরের মধ্যে বিনা যুদ্ধে কাবুল দখল করে তালিবান। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তালিবান প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বরাদরের সঙ্গে ৪৫ মিনিট বৈঠকের পরই পদত্যাগ করেন গনি। তার পরই সে দেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, নিজের কোর টিম নিয়ে আফগানিস্তান ত্যাগ করেছেন তিনি। তাজিকিস্তানের দিকে তিনি গিয়েছেন গনি।