এভারেস্টে তখন উঠেছে প্রবল তুষারঝড়, সেলফি তোলার জন্য নিজের সেফটি রোপ খুলে ফেললেন পর্বতারোহী। আর তাতেই ঘটল মর্মান্তিক পরণতি। আচমকাই পা হড়কে পড়ে যান তিনি। তারপর তুষারে ঢাকা মাউন্ট এভারেস্টে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ।
৩১ বছর বয়সী ওই চিনা পর্বতারোহীর কেবলমাত্র পদবীটুকুই (হং) জানা গিয়েছে। চিনের সিচুয়ান উপত্যকায় মাউন্ট নামা অভিযানে গিয়েছিলেন তিনি।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ৫৮৮ ফিট উচ্চতায় উঠেছিলেন হং ও তাঁর দলের অন্যান্য পর্বতারোহীরা। তবে আচমকাই তাদের পর্বতারোহনে বাধা সৃষ্টি করে তুষারঝড়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সামিটের কাছাকাছি পৌঁছতেই হং নিজের সেফটি রোপ খুলে ফেলেছিলেন। বরফ কাটার কোদালও ব্যবহার করছিলেন না তিনি। আচমকাই তাঁর পা হড়কে যায়।
বরফে ঢাকা ওই পাহাড়ে পা হড়কে ২০০ মিটার নীচে পড়ে যান হং। বাকি পর্বতারোহীরা তুষারঝড়ের মধ্যে চাক্ষুস করেন সেই হাড়হিম দৃশ্য। সেই মুহূর্ত অনেকেরই ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। যা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
উদ্ধারকারীরা দ্রুত সেই ঘটনাস্থলে পৌঁছলও হংকে বাঁচাতে পারেননি। পরবর্তীতে হংয়ের দেহ পাঠানো হয় নিকটবর্তী গংগ্গা মাউন্টেন টাউনে।
হংয়ের তুতো ভাই জানিয়েছেন, এই প্রথম পর্বতারোহনে এভারেস্টে গিয়েছিলেন তিনি। ছবি তোলার জন্যই তিনি সেফটি রোপ খুলে দিয়েছিলেন বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ঠিক তখনই পা পছলে যায় বরফের পাহাড়ে।
প্রায় ৩৫০ জন পর্বতারোহীকে উদ্ধার করা হয়েছে তুষারঝড়ে বিধ্বস্ত মাউন্ট এভারেস্টের সংশ্লিষ্ট সামিট পয়েন্ট থেকে। জানা গিয়েছে, মূলত ডিংরি কাউন্টি যা তিব্বতের দক্ষিণ পশ্চিমের শিগেজ শহরের কাছে অবস্থিত, সেখানকার সামিটেই এই তুষারঝড় দেখা গিয়েছে।
তিব্বতের কুডেং টংয়ের মিটিং পয়েন্টে এখনও পর্যন্ত আরও ২০০ পর্বতারোহী আটকে রয়েছেন বলে খবর। তাদের উদ্ধারে এমারজেন্সি টিম পাঠানো হয়েছে।
বর্তমান সময়টাই এভারেস্টে ট্রেকিংয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কিন্তু সেই সময়েই এমন ভয়ঙ্কর তুষারঝড় ওঠায় তাজ্জব আবহাওয়াবিদ, পর্বতারোহীরাও। অসময়ের এই তুষারপাতের কারণে ব্যাহত হয়েছে এভারেস্ট ট্রেকিং। জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।