ইজরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ (Israel-Hamas War) এক বছর পূর্তি হল। ঠিক একবছর আগে, ৭ অক্টোবর হামাস অতর্কিতে হামলা চালায় ইজরায়েলে। মৃত্যু হয় ১২০০-র বেশি সাধারণ মানুষের।
তারপরেই লেগে যায় যুদ্ধ। একবছরে এই যুদ্ধ শুধু ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে আর নেই। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে হাত মিলিয়েছে লেবাননের হিজবুল্লা গোষ্ঠী, ইরান। অন্যদিকে ইজরায়েলের পাশে রয়েছে আমেরিকা।
এই একবছরে এখনও পর্যন্ত কম করে ৪১ হাজার প্যালেস্তানির মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি হিসেবে আরও বেশি। কীভাবে শুরু হল ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ, ফিরে দেখা যাক গত একবছরের টাইমলাইন।
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হঠাত্ খবর। দক্ষিণ ইজরায়েলে বড়সড় অ্যাটাক করেছে হামাসের যোদ্ধারা। ১২০০-র বেশি মৃত্যু হয় ওই হামলায়। বহু মানুষকে হামাস জঙ্গিরা বন্দি করে নিয়ে যায় বিতর্কিত গাজা ভূখণ্ডে। যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর বদলা নিতে শুরু করল ইজরায়েল। গাজায় তীব্র বোমা, মিসাইল হামলা শুরু। ইজরায়েল সেনার একটি দল ঢুকে গেল গাজা ভূখণ্ডেও। রক্তাক্ত হামলা।
২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ইজরায়েলের বাহিনী ঢুকল গাজার আল শিফা হাসপাতালে। গাজা শহরের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। হাসপাতালে মৃত্যু মিছিল। গোটা বিশ্বের চিন্তা বাড়াল। ইজরায়েলের দাবি ছিল, ওই হাসপাতাল থেকেই কন্ট্রোল করছে হামাস। তাই তারা হামলা চালিয়েছে।
২০২৩ সালের ২৪-৩০ নভেম্বর ইজরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তি করল। কয়েকদিন বন্ধ রইল হামলা। বন্দিদের হস্তান্তর হল। কিন্তু যুদ্ধ থামল না।
১ ডিসেম্বর ফের শুরু হল যুদ্ধ। মিলিটারি অ্যাকশন শুরু হল গাজায়। ৬ ডিসেম্বর উত্তর গাজায় জাবালিয়ায় একটি পরিবারে ২২ জনের মৃত্যু হল হামলায়।
৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকা দাবি জানাল, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি হোক। ভোটও দিল। সেই ভোটে অংশ নিল না ব্রিটেন। ইতিমধ্যে ইয়েমেনের হাউথি জঙ্গিরাও হামাসের সঙ্গে হাত মেলাল। লোহিত সাগরে হাউথিরা জাহাজে হামলা করল।
২০২৪ সালের পয়লা জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইয়েমেনে হাউথি জঙ্গিদের নিকেশ করতে বিমানহানা চালাল। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্যালেস্তাইনের হামাসের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাল, গাজায় সাধারণ মানুষের মৃত্যু ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
২০২৪ সালের ১ এপ্রিল ইজরায়েল হামলা চালাল সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে ইরানের দূতাবাসে। ইরান জানাল, তাদের একাধিক আধিকারিকের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ২ থেকে ৬ এপ্রিল ইজরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু। বিক্ষোভকারীদের দাবি,হামাসের ডেরায় বন্দি ইজরায়েলিদের অবিলম্বে অক্ষত অবস্থায় মুক্ত করার ব্যবস্থা করুক নেতানিয়াহু সরকার।
চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল ইরান ঢুকল যুদ্ধে। কয়েকশো মিসাইল ইজরায়েলে হামলা চালাল। ২৬ মে রাফায় ইজরায়েলের হামলায় মৃত্যু হল ৪৫ জন সাধারণ মানুষের। নেতানিয়াহু স্বীকার করলেন, ইজরায়েলের বড় ভুল হয়েছে।
২২ জুলাই আমেরিকা সফরে গেলেন নেতানিয়াহু। মার্কিন কংগ্রেসে ঘোষণা করলেন, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইজরায়েল পূর্ণ জয়ী হয়েছে। এরপর ৩০ জুলাই লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসারল্লাহর ডান-হাত হিসেবে পরিচিত ফাওদ শুকরকে হত্যা করল ইজরায়েলের সেনা। ৩১ জুলাই হামাসের প্রধান ইসমাইলন হ্যানিয়েকে খুন করা হল ইরানে।
১৭ সেপ্টেম্বর লেবাননে কয়েক হাজার পেজার বিস্ফোরণ হল। হিজবুল্লাহর মূল যোগাযোগ চলত এই পেজারেই। ৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হল। তার ২৪ ঘণ্টা পরেই লেবাননে কয়েকহাজার ওয়াকি টকি বিস্ফোরণ হল।