মঙ্গল গ্রহ নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী— প্রায় সকলেরই যথেষ্ট কৌতুহল রয়েছে! তাই এই গ্রহের নানা গতিবিধির উপর নিরন্তর নজর রেখে চলেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই বার বার ধরা পড়ছে বেশ কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা!
ছবি: গেটি।
মঙ্গলে নাসার ল্যান্ডার ইনসাইট ল্যান্ডারের 'সিসমিক এক্সপেরিমেন্ট ফর ইন্টিরিয়র স্ট্রাকচার' (সিস) যন্ত্রটিতে বার বার ধরা পড়েছে এক অস্বাভাবিক কম্পন! এর আগে ২০১৯-এর ১৪ মার্চ, ১০ এপ্রিল এবং ১১ এপ্রিলে ধরা পড়ে মঙ্গলের কম্পন।
ছবি: গেটি।
ঘন ঘন লাল গ্রহের এই ভাবে থরথর করে কেঁপে ওঠার ঘটনাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা 'মার্শ কোয়েক' (Mars Quake) বলে চিহ্নিত করেছেন। অর্থাৎ, পৃথিবীতে যেমন ভূমিকম্প হয়, মঙ্গলেও তেমনই ঘটনা মাঝে মধ্যেই হয়।
ছবি: গেটি।
এখানে বলে রাখা ভাল, পৃথিবীর যেমন একবার লাট্টুর মতো পাক খেতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে, মঙ্গলের তেমন সময় লাগে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট। অর্থাৎ, পৃথিবীর তুলনায় ৪ মিনিট কম। মঙ্গলের এই ঘন ঘন কেঁপে ওঠার ঘটনায় হতবাক এবং বিচলিত বিজ্ঞানীমহল।
ছবি: গেটি।
আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন-এর সম্প্রতি প্রকাশ করা একটি তথ্য বেশ চাঞ্চল্যকর! মার্কিন বিজ্ঞানীদের দাবি, মঙ্গল প্রতি ২০০ দিনে নিজের নির্দিষ্ট কক্ষপথ থেকে ৪ ইঞ্চি করে দূরে সরে যাচ্ছে।
ছবি: গেটি।
এই প্রক্রিয়াটিকে দ্য চ্যান্ডলার ওয়াবল (Chandler wobble) বলে। আমেরিকান জ্যোতির্বিদ সেট কার্লো চ্যান্ডলারের (Seth Carlo Chandler) নাম এই ঘটনার নামকরণ করা হয়েছিল। কারণ, ১৮৯১ সালে তিনিই প্রথম এটি লক্ষ্য করেছিলেন।
ছবি: গেটি।
মার্কিন বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীও ৪৩৩ দিনে নিজের নির্দিষ্ট কক্ষপথ থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে। এই ভাবে পৃথিবী তার নির্দিষ্ট কক্ষপথ থেকে প্রায় ৩০ ফুট দূরে সরে দিয়েছে। তবে মঙ্গলের ক্ষেত্রে এই ঘটনা অনেক তাড়াতাড়ি ঘটছে যা চিন্তা বাড়িয়েছে বিজ্ঞানীদের।
ছবি: গেটি।
দীর্ঘ ১৮ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করার পর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই 'মার্শ কোয়েক' (Marsh Quake) এবং কক্ষপথ থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে এই তথ্য হাতে পেয়েছেন। এই ১৮ বছরে Mars Odyssey, Mars Reconnaissance Orbiter এবং Mars Global Surveyor— এই তিনটি উপগ্রহ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণা করা হয়েছে।
ছবি: গেটি।
মঙ্গল গ্রহে কোনও সমুদ্র নেই। সুতরাং, ঘন ঘন লাল গ্রহের এই ভাবে থরথর করে কেঁপে ওঠার পিছন সেখানকার পরিবর্তিত বায়ুমণ্ডলের চাপের কোনও প্রভাব থাকতে পারে না বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের। তাই বিজ্ঞানীদের মতে, এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
ছবি: গেটি।