অবশেষে আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হল। মায়ানমারে ঘটে গেল সামরিক অভ্যত্থান। এক বছরের জন্য দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিল সেনা বাহিনী।
তার আগেই মায়ানমারের সুপ্রিম নেত্রী আন সান সু কি-কে গৃহবন্দি করা হয় । স্টেট কাউন্সিলর সু কি এর আগেও সেনার হাতে বন্দি ছিলেন।
নোবেল জয়ী সু কির বন্দি হওয়ার খবরে বিশ্বে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে দলের বেশ কয়েকজন নেতাকেও আটক করেছে মায়ানমারের সামরিক বাহিনী।
সোমবার ভোরে সুকির দল ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শেষ রাতে সুকিকে আটক করা হয়। দলটির অন্য নেতাদেরও একই অবস্থা।আটকদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টও রয়েছেন৷
গতবছর নভেম্বরে মায়ানমারে নির্বাচনকে ঘিরে বেসামরিক সরকার এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল।
৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে আসা মায়ানমারের সেনাবাহিনী হুমকি দিয়েছিল, তাদের অভিযোগ আমলে না দিলে বাহিনীর পক্ষ থেকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সামরিক হুমকিতে অভ্যুত্থানের যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ এবং পশ্চিমের দেশগুলো।
এমন পরিস্থিতিতেই রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য আরও ১২ টি দেশ বিবৃতি দিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে চলার’ আহ্বান জানিয়েছিল।
মায়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে গেল।
২০১১ সালে সরাসরি সেনা শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রের পথে ফেরে মায়ানমার। প্রায় ৫০ বছর মিলিটারি শাসন ছিল দেশে। এখনও মায়ানমারের সংবিধানে পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত আছে।
গতবছর নভেম্বরের নির্বাচন ছিল দেশের দ্বিতীয় জাতীয় নির্বাচন, যা অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলেই মত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের। কিন্তু সেই নির্বাচনেই ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছে সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধীদল ইউনিয়ন সলিডারিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)। নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আর তাতেই দেশটিতে এ যাবৎকালের মধ্যে সরাসরি সবচেয়ে বড় সংঘাতে জড়ায় বেসামরিক সরকার এবং সামরিক বাহিনী।
রবিবার গভীর রাতে রাজধানীর দখল নেয় সেনা। সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা তারা কেটে দিয়েছে। তাই মায়ানমারের রাজধানী নেপিটোয় ছিন্ন সব ফোন ও ইন্টারনেটের লাইন।