করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউ মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরকে। হাসপাতালে জায়গা নেই। খোলা আকাশের নীচেই খুলতে হয়েছিল হাসপাতাল। এমনকি বিশ্বের অন্যতম উন্নত এই শহরে একটা সময় দেখা গিয়েছিল চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব। পিপিই-র জন্য হাহাকার। তবে সেই ভয়াবহ অতীত এখন স্মৃতির পাতায়। ফের ছন্দে ফিরল শহর।
একটা সময়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর মিছিল দেখেছ নিউইয়র্ক। ওয়াইকম্ব মেডিকেল সেন্টারের মর্গে আর মৃতদেহ রাখার জায়গা ছিল না। তাই হাসপাতালের বাইরেই গড়ে তোলা হয়েছিল অস্থায়ী মর্গ। এবার সেই শহর দেখল রোশনাই।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে নিউ ইয়র্কই। দ্বিতীয় ঢেউও মারাত্মক ভাবে আছড়ে পড়েছিল নিউ ইয়র্ক শহরে। অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই কয়েকটি এলাকায় ফের জারি হয়েছিল লকডাউনের বিধিনিষেধ। এবার তার থেকে মুক্তি মিললো।
সেই নিউ ইয়র্ক শহরের ছবিটাই বর্তমানে বদলে গেছে। মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ জিতে ফেলেছে শহর। ইতিমধ্যে নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ৭০ শতাংশের বেশি টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন সকলেই। আর এই আবহেই জারি থাকা যাবতীয় বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা করলেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো।
কুয়োমো সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, "এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এবং আমরা আরও বেশি কিছু করার করবো।" সেইসঙ্গে শহরের প্রতিটি মানুষকে টিকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
এদিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় শহরের বাণিজ্যিক এবং সামাজিক কেন্দ্রগুলিতে আরোপ থাকা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হল। তবে কুয়োমো বলেছিলেন যে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য মার্কিন সরকারের নির্দেশিকাগুলির উপর ভিত্তি করে কিছু সীমাবদ্ধতা এখনও থাকবে।
মঙ্গলবারের আগে পর্যন্ত রিটেলে ৫০ শতাংশ প্রবেশের অধিকার ছিল। জিম খোলা হয়েছিল ৩৩ শতাংশ। সিনেমাহলে ১০০ জনের বেশি প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তবে এসবই এখন অতীত।
যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁদের আর মাস্ক পরতে হবে না বলেও জানান হয়েছে। তবে যারা ভ্যাকসিন এখনও নেননি তাঁদের মাস্ক বাধ্যতামূলক।
এদিকে বিধিনিষেধ উঠতেই উৎসবে মাতল গোটা শহর। আতসবাজির রোশনাইতে ছেয়ে গেল আকাশ। সেজে উঠলো এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং ও অন্যান্য আকাশ ছোঁয়া ইমারত। ফের ছন্দে ফিরল স্বপ্নের শহর।
The iconic Empire State Building and other landmarks in New York were lit up in blue and gold as Governor Andrew Cuomo lifted all restrictions https://t.co/uPwI0PkGdU pic.twitter.com/519APio97D
— Reuters (@Reuters) June 16, 2021