যদি সত্যিই ফের পরমাণু বোমার ব্যবহার হয় তাহলে বিশ্বকে এর খেসারত দিতে হবে। ধ্বংসের এমন দৃশ্য দেখা যাবে যে বহু প্রজন্মকে এর কুফল ভোগ করতে হবে। মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য পৃথিবীতে জায়গা পাওয়াও কঠিন হবে। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ থামার নাম নেই। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বিশ্ব এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে মাঝে মাঝে পারমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আলোচনা সামনে আসছে।
অথচ আশ্চর্য হলেও একথা সত্যি যে, এমন কিছু জায়গা আছে পরমাণু বোমার হামলার পরও তা নিরাপদ থাকবে। এই সব জায়গায় এই পরমাণু বোমার প্রভাব থাকবে তবে তা অতি সামান্য। জেনে নিই পৃথিবীর সেই জায়গাগুলো সম্পর্কে।
'ডেইলি স্টার'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরমাণু হামলা এড়াতে যদি কোনও নিরাপদ স্থান থেকে থাকে, তা হল অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ। ১৯৬১ সালে একটি চুক্তি হয়েছিল। যার নাম এন্টার্কটিক চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী এই মহাদেশে কোনও সামরিক পদক্ষেপ করা যাবে না।
অর্থাৎ পরমাণু সমৃদ্ধ দেশগুলোও এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। আমেরিকা, রাশিয়া, ভারত, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া সব দেশের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য। অর্থাৎ এই দেশগুলির কেউই পরমাণু হামলা করতে পারবে না এই মহাদেশে।
আইসল্যান্ড একটি ছোট্ট দেশ। এই দেশটি উত্তর মেরুতে অবস্থিত। সারা বছর বরফে ঢাকা থাকে। আইসল্যান্ড একটি নিরপেক্ষ দেশ। তাই এখানে পরমাণু হামলার সম্ভাবনা খুবই কম। সেই কারণে এই স্থানটিকেও নিরাপদ মনে করা হয়। একইভাবে, প্রশান্ত মহাসাগরের ছোটো দ্বীপ গুয়ামকেও খুব নিরাপদ বলে মনে করা হয়। প্রায় ১.৫ মিলিয়ন জনসংখ্যা বিশিষ্ট এই দেশ সম্পূর্ণভাবে পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। এই দেশেরও কোনও শত্রু নেই।
একইভাবে অস্ট্রেলিয়ার পার্থও যে কোনও রাজনৈতিক কেন্দ্র থেকে এতদূরে যে সেখানে কোনও পরমাণপ হামলার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। এছাড়া ভূগর্ভস্থ টানেলে গিয়েও আক্রমণ এড়ানো যায়। তাই কলোরাডোকে নিরাপদ বলা যেতে পারে।
দ্য সান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরমাণু হামলার সময়ও আমেরিকার কলোরাডোতে পাহাড়ি এলাকায় তৈরি একটি কেন্দ্র নিরাপদ থাকবে। এখানে পাহাড়ের ভিতরে একটি 'নিউক্লিয়ার প্রুফ' গুহা রয়েছে। গুহার প্রবেশদ্বারে প্রায় ২৫ টন ওজনের একটি দরজা রয়েছে যা পারমাণবিক বোমার আঘাতেও গলে যাবে না।
এই স্থানটি NORAD (North American Aerospace Defence Command) এবং USNC (United States Northern Command) এর সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত। সোভিয়েত ইউনিয়নের আক্রমণের মুখোমুখি হওয়ার জন্য আমেরিকা এটি ৬০ এর দশকে তৈরি করেছিল।
পরমাণু হামলার সময় নিরাপদ স্থানের তালিকায় যে দেশের নাম সবার আগে চলে আসে, সেই দেশের নাম ইজরায়েল। এই দেশের উপর পরমাণু হামলার সম্ভাবনা খুব কমই বলে মনে করা হচ্ছে।
কারণ এখানে ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। যেগুলো কোনও দেশ ধ্বংস করতে চাইবে না। তবে এসবই জল্পনা-কল্পনার উপর ভিত্তি করে। আসল কথা হল পরমাণু যুদ্ধ হলে তার প্রভাব সারা বিশ্বে পড়বে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে বেড়াতে থাকবে।