ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ইমরান খান । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশের অন্দরে লাগাতার বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে ১১ দলের বিরোধী জোট।
দ্রব্যমূল্য ক্রমশ বাড়ছে। তারওপর ইমরান খান সরকারের একের পর এক দুর্নীতি। সব মিলিয়ে নাজেহাল পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। চড়া দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে দোসরা জানুয়ারি থেকেই একের পর এক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। পাক জনসংখ্যার ২৫ শতাংশেরও বেশি এখনও দারিদ্র্যসীমার নীচে। সেই আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। আর এই আবহেই ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে মুখ খুলল ইমরান সরকারের বিদেশমন্ত্রী।
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি এক বিবৃতিতে বলেছেন যে ভারত সরকার আন্দোলনরত কৃষকদের সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ, এখন পুরো ভারত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীও এক ট্যুইটে লিখেছেন গোটা বিশ্বের এই অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা উচিত। তবে ভারত সরকার আগেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও পররাষ্ট্রের মন্তব্য করার দরকার নেই।
কুরেশি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে আবারও কাশ্মীরের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র এক্সপ্রেস ট্রিবিউন অনুসারে, বিদেশমন্ত্রী কুরেশি প্রশ্ন তুলেছেন যে যদি কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অবস্থান এতটাই দৃঢ় হয় তবে আলোচনায় ভয় পাচ্ছে কেন? এক বিবৃতিতে কুরেশি বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রস্তাবে ভারত রাজি হয়নি। পরিবর্তে ভারত এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল যা কাশ্মীরের পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছিল।
কুরেশি দাবি করেছেন পাকিস্তান নাকি কাশ্মীরে কেবল শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন যে দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে উত্তেজনা রয়ে গেছে এবং সে কারণেই এই ইস্যুটির স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে।
কুরেশিকে যখন কাশ্মীর ইস্যুতে সামরিক সমাধানের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি বলেছিলেন যে এটি করা আত্মহত্যা করার সমতুল্য হবে। কুরেশি বলেছিলেন যে ভারত কাশ্মীরিদের অধিকার হরণ করছে এবং কয়েক দশক ধরে তাদের কণ্ঠকে দমন করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। কুরেশির দাবি এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা তখনই আসবে যখন শান্তি বিরাজ করবে।
মোদী সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলুপ্তি করার পর পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়। তবে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তাঁর মন্ত্রীরা অভ্যন্তরীণ সমস্যার দিকে না তাকিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কাশ্মীর ইস্যুতে বিবৃতি দিতে থাকেন।
এদিকে ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে ট্রাক্টর মিছিলের আগেই পাকিস্তানের ৩০০টি ট্যুইটার অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। দিল্লি পুলিশের দাবি, ওই ট্যুইটার অ্যাকাউন্টগুলি থেকে অনবরত কৃষকদের উসকানি দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক জানিয়েছিলেন, ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে ৩০০-রও বেশি ট্যুইটার হ্যান্ডেল পাকিস্তানে তৈরি হয়েছে কৃষকদের উসকানি দিয়ে ট্রাক্টর মিছিলে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য। বিভিন্ন এজেন্সি থেকে এই ধরনের কার্যকলাপের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। পাকিস্তানের এই ৩০০টি ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট অনবরত কৃষকদের আন্দোলন ও ট্রাক্টর মিছিল নিয়ে ট্যুইট করেছে হ্যাশট্যাগ সমেত।