মঙ্গলবার সন্ধেবেলা তালিবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানে সরকার গঠনের ঘোষণা করেছে। মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ হবে আফগানিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী। এই সরকারে যাঁরা আছেন তাঁদের মধ্যে ১৪ জন রাষ্ট্র সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তালিকায় Black listed। এমনকী সেই তাদের মধ্যে রয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ হাসান আখুন্দও।
তালিবানরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছে, সিরাজুদ্দিন হক্কানিকে। মার্কিন প্রশাসনের চোখে সে সন্ত্রাসবাদী। তার মাথাক দাম ১০ মিলিয়ন ডলার। তালিবান গঠিত সরকারে থাকা মোল্লা ইয়াকুব, মোল্লা আমির খান, মহম্মদ আব্বাস স্টানিকাজি -এরা সবাই নিরাপত্তা পরিষদের চোখে জঙ্গি।
BBC-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তানে যে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১৪ জনের সন্ত্রাসবাদী তালিকায় নাম আছে।
৩৩ সদস্যের মন্ত্রিসভায় তালিবান ফাইভ নামে পরিচিত পাঁচজন নেতার মধ্যে চারজনই একসময় গুয়ান্তানামোর কারাগারে বন্দি ছিল। এদের মধ্যে রয়েছে মোল্লা মোহাম্মদ ফাজিল (উপ -প্রতিরক্ষামন্ত্রী), খায়রুল্লাহ খায়রখোয়া (তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী), মোল্লা নুরুল্লাহ নুরি (সীমান্ত ও উপজাতীয় বিষয়ক মন্ত্রী) ও মোল্লা আবদুল হক ওয়াসিক (গোয়েন্দা পরিচালক)। পঞ্চম সদস্য মোহাম্মদ নবি ওমারিকে পূর্ব খোস্ত প্রদেশের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
২০০৪ সালে গুয়ান্তানামো কারাগার থেকে ওই তালিবানের পাঁচ নেতাকে মুক্তি দেয়। এদের মধ্যে ফাজিল ও নুরির বিরুদ্ধে ১৯৯৮ সালে মাজার-ই-শরিফে শিয়া হাজারা, তাজিক এবং উজবেক সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যার আদেশ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তালিবানরা কাবুল দখল করার পর ঘোষণা করেছিল, তারা শান্তিপূর্ণভাবে ও সমান অধিকার দেওয়ার মাধ্যমে সরকার চালানোর পক্ষে। কিন্ত, মঙ্গলবার যে সরকার গঠিত হয়েছে, সেখানে দেখা গিয়েছে একজন মহিলা সদস্যকেও মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।
দুই উপপ্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গণি বড়দার এবং মৌলভি আব্দুল সালাম হানাফি, যারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত, তারাও জাতিসংঘের কালো তালিকাভূক্ত।
ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানি আবার হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান। ২০০৮ সালে কাবুলের হোটেলে ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় FBI তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল। হাক্কানিদের আরও দুই সদস্যকেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে রাখা হয়েছে। এই দুজনের মাধ্যমেই পাকিস্তানের যোগাযোগ রাখে তালিবান।
জল ও জ্বালানি মন্ত্রী মোল্লা আবদুল লতিফ মনসুর এবং টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী নজিবুল্লাহ হাক্কানি -এই দুজনেই জাতিসংঘের কালো তালিকাযভুক্ত। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী মাওলানা আবদুল বাকি হাক্কানির বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।