দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্পদক্ষিণ পূর্ব আফগানিস্তানে রবিবার মধ্যরাতে প্রবল ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.০। কম্পন এতটাই প্রবল ছিল যে ভারতের একাধিক স্থানেও তা অনুভূত হয়। দিল্লিতেও এদিন অনেকেই মৃদু কম্পন টের পেয়েছেন। পাশাপাশি, পাকিস্তানের বেশ কিছু অঞ্চলেও ভূমিকম্পের তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে।
প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, জলালাবাদ থেকে ২৭ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। রাত ১২টা ৪৭ মিনিটে (IST) হঠাৎ প্রবল কম্পন শুরু হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মাটির প্রায় ৮ কিলোমিটার গভীরে। সেই সময় উত্তর ও পশ্চিম ভারতেও বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়। মাঝরাতে এভাবে ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে অনেকে ঘর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।
আফগানিস্তানে এত ভূমিকম্প হয় কেন?
রেড ক্রসের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বত এলাকা ভূতাত্ত্বিকভাবে অত্যন্ত সক্রিয়। প্রতি বছর এই অঞ্চলে একাধিক ভূমিকম্প হয়। তার মূল কারণ হল, এই এলাকাটা ভারতীয় এবং ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। পাশাপাশি, আফগানিস্তানের হেরাত শহরের ঠিক নিচ দিয়ে একটি বড় ফল্ট লাইন গিয়েছে।
মাত্র এক মাস আগেও আফগানিস্তানে একাধিক কম্পন হয়েছিল। ২ অগাস্ট, রিখটার স্কেলে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তারপর ফের ৬ অগাস্ট, ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভূৃপৃষ্ঠ থেকে যত কম গভীরতায় (shallow) ভূমিকম্প হবে, ততই সেটা বিপজ্জনক। কারণ, এমন ক্ষেত্রে কম্পনের প্রভাবটা খুব দ্রুত ভূপৃষ্ঠে পৌঁছে যায়। এতে ঘরবাড়ি, নির্মাণের ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে। বলাই বাহুল্য, প্রাণহানির ঝুঁকিও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
ভূমিকম্প কেন হয়?
এর জন্য ভূপৃষ্ঠের গঠন বোঝাটা জরুরি। পৃথিবী কোনও 'সলিড' পাথর নয়। আসলে আমাদের এই ভূপৃষ্ঠ একাধিক টুকরো অবস্থায় লাভার চাদরের উপর ভাসমান। এগুলিকে 'টেকটোনিক প্লেট' বলা হয়। এই প্লেটগুলো প্রায়শই নড়াচড়া করে। আর সেই সময়েই পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এই বারবার সংঘর্ষের ফলে ক্রমশই চাপ বাড়তে থাকে। চাপ যখন চরমে পৌঁছয়, তখনই প্লেট ভেঙে যায়। ভাঙনের সঙ্গে জমে থাকা এনার্জি ছিটকে বেরিয়ে আসে। এই এনার্জি রিলিজ থেকেই ভূমিকম্পের কম্পন হয়।