পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আবারও বিতর্ক তৈরি করেছেন। আমেরিকায় পাকিস্তানি প্রবাসী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময়, মুনির ধর্মীয় সুরে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সিএমডি মুকেশ আম্বানিকে হুমকি দিয়েছেন। পাকিস্তানি সেনা প্রধান মুনির তার বক্তৃতায় বলেন, 'একটি টুইট করা হয়েছিল, যাতে সুরা ফিল এবং মুকেশ আম্বানির ছবি ছিল, যাতে পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান কী করবে সে সম্পর্কে একটি বার্তা দেওয়া যায়।' মুনির হুমকির সুরে বলেন, 'আমরা ভারতের পূর্ব থেকে শুরু করব, যেখানে তাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ রয়েছে, এবং তারপর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হব।'
আসিম মুনির কী বলেছেন?
পাকিস্তানি সেনাপ্রধান আসিম মুনির তাঁর বক্তৃতায় বলেন যে, পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান কী করবে সে সম্পর্কে একটি বার্তা দেওয়ার জন্য একটি টুইট করা হয়েছে, যাতে সুরা ফিল এবং মুকেশ আম্বানির ছবি ছিল। মুনির আরও বলেন যে, আমরা ভারতের পূর্ব থেকে শুরু করব, যেখানে তাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ রয়েছে, এবং তারপর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হব।
মুকেশ আম্বানি কেন লক্ষ্যবস্তুতে?
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের লক্ষ্যবস্তুতে মুকেশ আম্বানি, কারণ তিনি ভারতের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং তার কোম্পানিগুলি ভারতের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের হুমকির উদ্দেশ্য হল ভারতের সামরিক শক্তির পাশাপাশি এর অর্থনৈতিক শক্তিকে দুর্বল করা। মুনির সরাসরি মুকেশ আম্বানিকে লক্ষ্য করে ভারতের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সম্পদের উপর আক্রমণ করার সতর্কতা দিয়েছেন, যাতে ভারতের মধ্যে ভয় এবং অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মুকেশ আম্বানি বনাম পাকিস্তান
মুকেশ আম্বানির মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা পাকিস্তানের বার্ষিক বাজেটের দ্বিগুণ। এপ্রিলে প্রকাশিত ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় মুদ্রায় আম্বানির সম্পদের পরিমাণ ৮.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি, যেখানে পাকিস্তানের পুরো বার্ষিক বাজেট মাত্র ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি। এই তুলনা কেবল দুই দেশের সম্পদ এবং বাজেটের মধ্যে পার্থক্যই দেখায় না, বরং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ব্যবধান এবং পাকিস্তানের গুরুতর আর্থিক সংকটকেও তুলে ধরে। এমন পরিস্থিতিতে, যখন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ভারতকে হুমকি দেওয়ার জন্য আম্বানির নাম নেন, তখন তিনি অসাবধানতাবশত নিজের দেশের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার কথা সামনে আনেন।
মুনিরের এই মন্তব্যকে কেউ কেউ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুশি করার জন্য পরিকল্পিত পদক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন বাণিজ্য দাবির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন এবং রিলায়েন্স রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের একটি প্রধান পরিশোধক হওয়ায়, হুমকিটি কেবল একজন ব্যক্তির জন্য ছিল না। কেউ কেউ মনে করছেন , এটি ভারতের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বের উপরও আক্রমণ।