পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের লোয়ার দির, বাজাউর এবং অ্যাবোটাবাদ সহ একাধিক জেলায় আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। লোয়ার দিরের ময়দান সোরি পাও এলাকায় একটি বাড়ির ছাদ ধসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহিলা ও শিশু সহ চারজন আহত হয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে সাতজনকে উদ্ধার করেছেন। যাদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাঞ্জকোরা নদীর জলস্তর উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজাউর জেলায়, জাবরারি এবং সালারজাই এলাকায় আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সূত্র অনুসারে, এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃতদেহ এবং ৪ জন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। কমপক্ষে ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জাবরারি গ্রামে হড়পা বানে বেশ কয়েকজন আহত হন। উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। মানসেহরায়, কাঘান জাতীয় সড়কের বাসিয়ান পয়েন্টে স্রোতের তোড়ে একটি গাড়ি ভেসে গেলে ২ জনের মৃত্যু হয়। একজন আহত হয়েছেন। আরও তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার জন্য একটি হেলিকপ্টারও পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) গিলগিট-বালতিস্তানের ঘিজার জেলায় আকস্মিক বন্যায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও দুজন নিখোঁজ হয়েছেন।
বন্যায় এক ডজনেরও বেশি বাড়িঘর, বেশ কয়েকটি গাড়ি, স্কুল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি কারাকোরাম হাইওয়ে এবং বালতিস্তান হাইওয়ে সহ বিভিন্ন স্থানে ধসের জেরে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উত্তর-পূর্ব নীলম উপত্যকাও বড় ধরনের ধস নেমেছে। পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন্যায় লাওয়াত নালার উপর দুটি সংযোগকারী সেতুও ভেসে গিয়েছে। জাগরণ নালা কুন্ডাল শাহিতে একটি সেতু ভেসে গিয়েছে। ঝিলম উপত্যকায় পালহোটে হড়পা বানের ফলে রাস্তার কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাতে কয়েক ডজন গাড়ি আটকে পড়ে।
নীলম নদীর জল দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন বন্যার সতর্কতা জারি করেছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদ জেলায়, সরলি সাচা গ্রামে একটি বিশাল ভূমিধসে একই পরিবারের ৬ জন চাপা পড়েছে।