চিনের থেকে আধুনিক যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আনুমানিক ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ২০টি চিনা J-10CE যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করছে। সরকারি নথির উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা জানিয়েছে, এই চুক্তিতে প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত ব্যয়ও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আধুনিকীকরণ, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য ২০২৬ এবং ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যুদ্ধবিমানগুলি হাতে পাবে। চুক্তি সম্পর্কে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি, তবে সংবাদপত্রটি জানিয়েছে যে তারা এই ডিল সম্পর্কিত সরকারি নথি হাতে পেয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে বিমানের দাম ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ১০ বছর ধরে মেটানো হবে।
J-10CE হল চিনের J-10C যুদ্ধবিমানের রফতানি সংস্করণ। এই বিমান ইতিমধ্যেই চিনা বিমান বাহিনী ব্যবহার করছে। পাকিস্তান বলেছে যে মে মাসে ভারতের সঙ্গে চার দিনের সামরিক সংঘর্ষের সময় তাদের বিমান বাহিনী চিনা J-10C জেট ব্যবহার করেছিল। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয় প্রতিটি বিমানের বেস প্রাইস ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২০টি বিমানের জন্য ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমান করেছে। যেখানে প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম-সহ অন্য খরচ আরও ৮২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। বিমা, ভ্যাট, এজেন্সি কমিশন, সিভিল ওয়ার্কস এবং আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে মোট খরচ ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
কয়েক মাস আগে চিন সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর কার্যালয় জানিয়েছে যে ইউনূস চিন সফরে গিয়ে যুদ্ধ বিমান কেনার বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। যা বাস্তবায়নের পথে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এএনএম মুনিরুজ্জামান বলেছেন যে বিমান বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে নতুন যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করেছিল। যদিও তিনি এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সবটাই মূল্যায়নের পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, 'আজ বিশ্বে একটি নতুন ধরনের ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি হয়েছে, তাই যে কোনও দেশ থেকে বিমান কেনার আগে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করা উচিত।'
ভারতের জন্য উদ্বেগ?
বাংলাদেশের নতুন J-10CE জেটগুলি চিনা প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এগুলি দ্রুত, আধুনিক এবং বহুমুখী। এগুলি বাংলাদেশের পুরানো F-7 জেটগুলিকে প্রতিস্থাপন করবে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। বাংলাদেশের বিমান বাহিনী শক্তিশালী হলে, ভারত দুই ফ্রন্টের যুদ্ধের (পাকিস্তান এবং চিন) পাশাপাশি তৃতীয় ফ্রন্টের মুখোমুখি হতে পারে। কারণে বাংলাদেশকে অস্ত্র বেচে ভারতকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে চিন।
warpowerbangladesh.com এর মতে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হাতে ৪৪টি যুদ্ধবিমান সহ ২১২টি বিমান রয়েছে। যার মধ্যে ৩৬টি চিনা তৈরি এফ-৭। রয়েছে ৮টি MiG-29B মাল্টিরোল ফাইটার। রাশিয়ান ইয়াক-১৩০ বিমানের একটি ছোট বহরও রয়েছে বাংলাদেশের বহরে।