পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অংশগ্রহণ ছাড়া তিস্তা এবং ফরাক্কার জলবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও রকম চুক্তিতে তাঁর 'তীব্র আপত্তি' রয়েছে বলে সোমবারই মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা ঘিরে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে তিস্তা চুক্তি নিয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিস্তা এবং ফরাক্কার জলবণ্টন নিয়ে মমতার আপত্তি প্রসঙ্গে মঙ্গলবার হাসিনা বলেছেন যে, এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না। কারণ এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। একইসঙ্গে হাসিনা মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ভারতে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেই তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। যে তালিকায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
এই প্রসঙ্গে হাসিনা বলেছেন, 'ভারত সহযোগিতা করবে। যৌথ কমিটি হবে। এখানে টেকনিক্যাল গ্রুপ আসবে। আর মমতা ব্যানার্জির যে চিঠি, সেটা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন। এটা তো তাঁদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এখানে তো আমার কিছু বলার নেই। যেটা মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ওটা ওঁর ক্ষোভ, ওঁর সঙ্গে আলোচনা করেনি। উনি তো দিল্লিতে ছিলেন না। আমি নিজেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। থাকলে অন্তত আমি আলোচনা করতাম।'
তিস্তা প্রকল্প প্রসঙ্গে এদিন হাসিনা আরও বলেছেন, 'আমরা তিস্তা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভারত এবং চিন আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের দেশের মানুষের জন্য যে প্রস্তাবটি বেশি লাভজনক এবং উপযোগী হবে, সেটাই আমরা গ্রহণ করব।' বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, 'ভারতের সঙ্গে তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সমস্যা রয়েছে। ভারত যদি তিস্তা প্রকল্প করে, তা হলে বাংলাদেশের জন্য ভাল হবে। তা হলে সব সমস্যার সমাধান হবে।'
তৃতীয় মোদী সরকারের শপথের পর ভারত সফরে এসেছিলেন হাসিনা। মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ফরাক্কা গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি নবীকরণের জন্য যৌথ কারিগরি কমিটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বাংলার তৃণমূল সরকার। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, গঙ্গার জলবণ্টন নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে। তার আগে চুক্তি নবীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অন্য দিকে, ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির খসড়া তৈরি করে ভারত এবং বাংলাদেশ। কিন্তু ওই চুক্তির বিরোধিতা করেছেন মমতা।