মুজিবুর রহমানের 'জয় বাংলা' আর বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান নয়। বাংলাদেশের একটি হাইকোর্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয় ‘জয় বাংলা’কে দেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করেছিল। হাইকোর্টের সেই রায় স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। সম্প্রতি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কও নোট থেকে মুজিবুর রহমানের ছবি মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার হাইকোর্টের রায় স্থগিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। ২০২০ সালের ১০ মার্চ দেওয়া হাইকোর্টের ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ২ ডিসেম্বর লিভ টু আপিল পিটিশন দাখিল করে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ মঙ্গলবার সেই আবেদন গ্রহণ করে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিত করে। বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে জাতীয় স্লোগান ঠিককরার বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং বিচার বিভাগের এই ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। শুনানিতে সরকারের পক্ষে উপস্থিত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক বলেন, আপিল বিভাগের আদেশের পর 'জয় বাংলা' জাতীয় স্লোগান হিসেবে গণ্য হবে না।
২০২০ সালের ১০ মার্চ একটি হাইকের্ট নির্দেশে বলে, 'জয় বাংলা' হল দেশের জাতীয় স্লোগান। সকল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমাবেশে জয় বাংলা স্লোগান ব্যবহার করার নির্দেশ দেয় আদালত। সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকেও নির্দেশ দেওয়া হয়। ২২২ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা এটিকে জাতীয় স্লোগান হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি নোটিশ জারি করে। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় ইউনূসের সরকার। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের আরেকটি রায় স্থগিত করে, যা ১৫ অগাস্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং সরকারি ছুটি হিসাবে ঘোষণা করেছিল। ১৩ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয় যে ১৫ অগাস্টে কোনো জাতীয় ছুটি থাকবে না। গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয় যে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক নতুন নোট ছাপছে, যাতে 'বঙ্গবন্ধু' শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না। জুলাই বিদ্রোহের ছবি থাকবে।