ব্রাজিলের উপকূল থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত সর্প দ্বীপ বা স্নেক আইল্যান্ড। এখানে প্রায় প্রতি পদক্ষেপেই দেখতে পাওয়া যায় সাপ। বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপও এখানেই থাকে। এটাই পৃথিবীর একমাত্র জায়গা যেখানে Golden lancehead সাপ দেখতে পাওয়া যায়। মূলত এই সাপের কারণেই মানুষ দ্বীপটিকে এড়িয়ে যান।
সর্প দ্বীপের আসল নাম অবশ্য Ilha da Queimada Grande। সাও পাওলে থেকে মাত্র ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত এই জায়গাটি। এই দ্বীপে কাকে যেতে দেওয়া হবে আর কাকে নয় তা ঠিক করে ব্রাজিলের নৌসেনা। কারণ শুধু মানুষের নিরাপত্তা নয়, সাপেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাটাও তাদের লক্ষ্য। তাই কয়েকজন বিজ্ঞানী ও নৌসেনা আধিকারিক ওই দ্বীপে যেতে পারেন।
এই জায়গাটি আসলে সাপেদের। এর মধ্যে রয়েছে গোল্ডেন ল্যান্সহেড এবং বোথ্রপস ইনসুলারিসের মতো সাপও। এটি একটি বিষাক্ত সাপ যা ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এই সাপ মূলত পাথি খায় এবং এদের বিষও খুব দ্রুত কাজ করে। একবার দংশন করলেই পাখি মার যায়। গোল্ডেন ল্যান্সহেড শিকারকে ট্র্যাক করতে পারে না, তাই তাদের বিষ এতটাই মারাত্মক যে তাতে সঙ্গে সঙ্গে পাখি মারা যায়। এই সাপের বিষে মানুষের মাংস মুহূর্তের মধ্যে গলে যায়।
এই দ্বীপে গেলে সাপেদের সম্মুখীন হতেই হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখানে প্রতি বর্গমিটারে কমপক্ষে ৫টি সাপ থাকে। সাপের কারণে এই দ্বীপে পাখিদের আনাগোনাও কম। তবে অভিবাসনের সময় পাখিরা এখানে বিশ্রাম নেয়, আর তখনই শিকারে নেমে পড়ে সাপেরা।
Fans of herpetology might think they’d love to visit Snake Island, a remote spit of land off the shore of Brazil where serpents rule.https://t.co/AgSGNQTH48
— IFLScience (@IFLScience) November 26, 2022Advertisement
সুরক্ষিত নয় সাপেরাও
এখানে বিষধর সাপ থাকলেও তাদেরও আতঙ্ক থাকে। আর এই আতঙ্ক মূলত চোরা শিকারীদের। কারণ গোল্ডেন ল্যান্সহেডকেই যেহেতু পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ বলে মনে করা হয়, তাই সেগুলিকে ধরে অবৈধভাবে বিক্রির চেষ্টা করে চোরা শিকারীরা।
এই দ্বীপে একটি লাইট হাউজও আছে, যার থেকে বোঝা যায় যে এখানে কখনও মানুষের বসবাস ছিল। শোনা যায়, ১৯০৯ থেকে ১৯২০ পর্যন্ত এখানে লাইট হাউজ কিপার তাঁর পরিবারকে নিয়ে বাস করতেন। কিন্তু এই সাপেদের আক্রমণেই পরিবারটি শেষ হয়ে যায়। আর তাই এই সাপেদের আতঙ্কেই মানুষে এখানে বেড়াতে যেতেও দেওয়া হয় না।
আরও পড়ুন - ঘাড়-পিঠের ব্যথা? এই ৬ অভ্যাসে মিলবে আরাম