দিনটা ছিল ১৯২৮ সালে ১৪ জুন। লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনায় (Argentina) জন্মগ্রহণ করেন এক শিশু। নাম রাখা হয় এর্নেস্তো গুয়েভারা দে লা সের্না। পরবর্তীকালে সারা বিশ্বের কাছে যিনি পরিচিত হন চে গুয়েভারা (Che Guevara) নামে। ব্যক্তি জীবনে চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও সুখের জীবন বেছে নেননি তিনি। বদলে পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন চে। মার্কসের আদর্শে দিক্ষীত হয়ে সমাজ থেকে অর্থনৈতিক বৈষম্যকে দূর করে ফেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। লাতিন আমেরিকার একাধিক দেশ, বিশেষত কিউবা (Cuba) আন্দোলনে তাঁর ছিল বিশেষ ভূমিকা। প্রায় গোটা লাতিন আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন চে। ১৯৬৭ সালে বলিভিয়ায় (Bolivia) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু চে না থাকলেও তাঁর আদর্শ আজও বেঁচে রয়েছে কিছু মানুষের অন্তরে। আর সেখানেই প্রশ্ন, বর্তমান বিশ্বে এখনও ঠিক কতটা প্রাসঙ্গিত চে?
এই প্রসঙ্গে বামনেত্রী দীপ্সিতা ধর জানাচ্ছেন, "চে এই জন্যই আজও প্রাসঙ্গিক, কারণ তিনি শিখিয়েছিলেন একটা মানুষের জীবনকে শুধুমাত্র তাঁর পেশা বা দেশের সীমানা দিয়ে বাঁধা যায় না। তিনি বিশ্বাস করতেন একটা মানুষের সঠিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা খুব প্রয়োজন। আর এই প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে শিক্ষার জায়গা ওটাই।" দীপ্সিতার মতে, "শুধু ব্যক্তিগত জীবনে সফল হওয়াই নয়, সমাজকে কতটা ফিরিয়ে দিতে পারলাম, গরীব ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য আদৌ কিছু করতে পারলাম কি না, এই জীবনবোধটাই চে দিয়ে গিয়েছেন।" তাই যতদিন পৃথিবীর বুকে অন্যায় অত্যাচার থাকবে, ততদিনই যুবসমাজের কাছে চে-এর জীবন অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে বলে মনে করেন দীপ্সিতা ধর।
প্রাক্তন বাম নেতা তথা বর্তমান বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, "চে আমার কাছে আমার মতো করে প্রাসঙ্গিক। যে অন্যায় অত্যাচার বা সিস্টেম মানুষকে সাধারণ সুরাহা দিতে পারে না, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে চে আজও প্রাসঙ্গিক। কারণ তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন সবসময় মানুষের স্বার্থে যা হওয়া উচিত বা যা হচ্ছে না তারজন্য লড়াই চালিয়ে যেতে। আর সেই লড়াইটার অনুপ্রেরণাও তিনিই।"