চিন তিব্বত ও জিনজিয়াংকে সংযুক্ত করতে প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল প্রকল্প শুরু করতে চলেছে চিন। যা ভারতের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-এর কাছাকাছি যাবে। এবং বিতর্কিত আকসাই চিন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে। প্রকল্পটি নেপালের সীমান্ত ও সংবেদনশীল চাম্বি উপত্যকায় পৌঁছবে, যেখানে ২০১৭ সালে ডোকলাম সংঘাত হয়েছিল।
প্রকল্পের ইতিহাস ও বিস্তার
২০০৬ সালে চিন প্রথম তিব্বতকে তার রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করে। এরপর ২০১৪ সালে লাসা-শিগাতসে ও ২০২১ সালে লাসা-নিংচি রেললাইন চালু হয়। নতুন রেলপথ শিগাতসে থেকে শুরু হয়ে নেপালের সীমান্ত বরাবর এগিয়ে আকসাই চিন হয়ে জিনজিয়াংয়ের হোতানে পৌঁছবে। গড় উচ্চতা ৪,৫০০ মিটারের বেশি হওয়ায় নির্মাণে পার্মাফ্রস্ট, হিমবাহ ও হিমায়িত নদীর মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
প্রকল্পটি জিনজিয়াং-তিব্বত রেলওয়ে কোম্পানি (XTRC) তত্ত্বাবধান করবে, যার লক্ষ্য ২০৩৫ সালের মধ্যে লাসাকে কেন্দ্র করে ৫,০০০ কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।
ভারতের জন্য উদ্বেগ
১. আকসাই চিন বিরোধ — আকসাই চিন ভারতের অংশ হলেও ১৯৫০-এর দশক থেকে চীনের দখলে। ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল এখানকার জিনজিয়াং-তিব্বত হাইওয়ে নির্মাণ। নতুন রেলপথও এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যাবে, যা ভারতের জন্য কৌশলগত সতর্কতা।
2. সীমান্ত নিরাপত্তা — রেললাইন চালু হলে চিন দ্রুত সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম সীমান্তে পাঠাতে পারবে, যা অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমের মতো সংবেদনশীল এলাকায় উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
অন্যান্য সম্প্রসারণ পরিকল্পনা
চিন লাসা-নিংচি রুট চেংডু পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, যা অরুণাচল সীমান্তের কাছে একটি বড় সামরিক কেন্দ্র। রেললাইন নেপাল-তিব্বত সীমান্তের গিরং ও চাম্বি উপত্যকায়ও পৌঁছাবে, যা ২০১৭ সালের ডোকলাম বিরোধের কেন্দ্রস্থল।
ভারতের প্রস্তুতি
ভারত এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে সীমান্ত অবকাঠামো উন্নয়নে মনোযোগ বাড়াচ্ছে। তবুও বিশ্লেষকদের মতে, চিনের এই প্রকল্প শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, বরং একটি কৌশলগত ও সামরিক চাপের ইঙ্গিত বহন করছে।