
মহিলা সাংবাদিককে 'শূকর' বলে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একের পর এক প্রশ্নবাণে ছেঁকে ধরেছিলেন। সে সময়েই এক মহিলা সাংবাদিককে থামাতে গিয়ে মেজাজ হারান তিনি। ট্রাম্প বলে ওঠেন, 'কোয়ায়েট কোয়ায়েট, পিগি!' অর্থাৎ 'চুপ করো শূকর।' সেই মুহূর্তের একটি ভিডিো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি bangla.aajtak.in.
কে এই সাংবাদিক?
মহিলাদের প্রতি ট্রাম্পের এ হেন আচরণে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সকলেই। জানা গিয়েছে, যে মহিলা সাংবাদিকের উদ্দেশে তিনি এই মন্তব্য করেন, তাঁর নাম ক্যাথরিন লুসি। তিনি বর্ষীয়ান এক সাংবাদিক এবং দীর্ঘদিন ধরেই হোয়াইট হাউস কোরেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। ব্লুমবার্গ সংস্থায় তিনি দু'দশকেরও বেশি সময় ধরে সিনিয়র পদে রয়েছেন। জাতীয় রাজনীতির খবর সামলান ক্যাথরিন।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঘটনাটি গত শুক্রবারের। এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার সময়ে সাংবাদিক ক্যাথরিন লুসি ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেছিলেন জেফ্রি এপস্টাইন ফাইল বিতর্ক নিয়ে। তাঁর প্রশ্ন ছিল, 'যদি ওই ফাইলে বিতর্কিত কিছু না-ই থাকে তবে...।' মাঝপথেই তাঁকে থামিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রেগে উঠে তিনি তর্জনী দেখিয়ে বলেন, 'চুপ করো শুয়োর!' পাল্টা কিছু বলেননি ওই সাংবাদিক। তবে সেই মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তীব্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে এই নিয়ে। সামান্য প্রশ্ন করায় ট্রাম্প মহিলা সাংবাদিককে যে ভাবে অশ্লীল মন্তব্য করে অসম্মান করেছেন, তা ভাল চোখে দেখছে না মার্কিন সাংবাদিক মহল।
সিএনএন-এর লিড অ্যাঙ্কর জেক ট্যাপার বলেন, 'এই ধরনের মন্তব্য কখনওই মেনে নেওয়া যায় না।' তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডলে এই ভিডিও শেয়ারও করেছেন। ফক্স নিউজের প্রাক্তন অ্যাঙ্কর গ্রেচেন কার্লসন বলেন, 'বিরক্তিকর এবং অসম্মানজনক।' তিনি নিজেও এই ধরনের ব্যবহার পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'মিস আমেরিকা বিচারক উইলিয়াম গোল্ডম্যান একটি বইতে আমায় মিস পিগি বলে উল্লেখ করেছিলেন। ১০৫ পাউন্ড জেতার জন্য আমি অনেক মোটা বলেও লিখেছিলেন নিজের বইতে।' উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে এই অ্যাঙ্কর মিস আমেরিকা খেতাব জিতেছিলেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউজকম নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে এই নিয়ে মিমও শেয়ার করেছেন।
হোয়াইট হাউসের সাফাই
বিতর্ক তুঙ্গে উঠতেই হোয়াইট হাউস জানায়, ওই সাংবাদিকই অভদ্র আচরণ করেছিলেন। অপেশাদার তিনি, নিজের সহকর্মীদের সঙ্গেও তিনি খারাপ ব্যবহার করেছেন। সঙ্গে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, 'যেমন আচরণ করবে, তেমনই ভুগতে হবে।'
ক্যাথরিন লুসির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর সংস্থা ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে এমন খবর তারা আবারও পেশ করবেন সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে।
তবে এটাই প্রথমবার নয়। সাংবাদিকদের সঙ্গে ট্রাম্পের খারাপ আচরণ আগেও হেডলাইন তৈরি করেছে। সৌদি আরবেন রাজা মহম্মদ বিন সলমানের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে তিনি এবিসি নিউজের মেরি ব্রুসকে বলেন, 'এবিসি নিউজ ফেক। সবচেয়ে খারাপ সংস্থা।' ওই সাংবাদিক তাঁকে জামাল খাসহোগ্গি এবং এপস্টাইন ফাইল নিয়ে প্রশ্ন করায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, 'তোমার আচরণ খারাপ। মার মনে হয়, তুমি অত্যন্ত খারাপ একজন রিপোর্টার। তুমি কোনও প্রশ্ন করবে না।' এমনকী এবিসি নিউজের লাইসেন্স নিয়েও টানাটানি পড়ে গিয়েছে আমেরিকায়।