রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে এবার নতুন দাবি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'ডিসেম্বরের মধ্যেই রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেবে ভারত।' দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফোন পেয়েছেন বলে জানিয়েওছেন মোদী। তবে সেই ফোন কলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনওরকম আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেনি নয়াদিল্লি। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প দাবি করে চলেছেন, রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না ভারত, খোদ মোদী নাকি এ কথা জানিয়েছেন তাঁকে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করার পরের দিনই, বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ২টি তেল সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এদিন হোয়াইট হাউসে ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। রসনেফট এবং লুকঅয়েল নামে রাশিয়ার দুটি তেল কোম্পানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। দুটি সংস্থাই অনুসন্ধান, পরিশোধন এবং আন্তর্জাতিক তেল বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। একটি বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (OFAC) বলেছে, ‘যুদ্ধ থামানোর কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না রাশিয়া। অহেতুক গড়িমসি করছে। তাই এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলো।’ তারপরে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ভারত ধীরে ধীরে কিন্তু উল্লেখযোগ্য হারে তেল কেনা কমিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, ডিসেম্বরের মধ্যে তা শূন্যের কোঠায় নেমে যাবে বলেও দাবি করেন তিনি। ট্রাম্পের কথায়, ‘আপনারা সবাই জানেন, ভারত আমায় আশ্বাস দিয়েছে যে রাশিয়া থেকে তারা আর তেল কিনবে না। তবে এটা একটা প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে বন্ধ করা যায় না। কিন্তু বছরের শেষ নাগাদ তারা রাশিয়ার সঙ্গে তেলের লেনদেন শূন্যে নামিয়ে আনবে।’
ভারতের ৪০% অপরিশোধিত তেল রাশিয়া থেকে আসে বলে দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এই নিয়ে তাড়াহুড়ো করলে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তাই ধীরে সুস্থে এই প্রক্রিয়া চালানো হবে।' আবার সুকৌশলে ভারতের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, 'ভারত দারুণ সহযোগিতা করছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও চমৎকার কাজ করছেন।' তার দু’দিন আগেই অবশ্য হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কিনতে থাকে, তাহলে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তবে আমার মনে হয় না, তারা এমন কিছু করবে। মোদীজির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেবেন বলেছেন।’
প্রসঙ্গত, রাশিয়া থেকে তেল কেনায় ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০% শুল্ক চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, এই টাকাতেই রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নয়াদিল্লি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, দেশবাসীর স্বার্থরক্ষাই অগ্রাধিকার। তাই যেখান থেকে সুবিধা হবে, সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত।