সোমবার ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পাকিস্তান। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির (NCS) তথ্যানুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৭। এই মাত্রা খুব বেশি নয়। তবে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার। এই কম গভীরতার কারণেই অতি প্রবল কম্পন অনুভূত হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার ও রবিবার পাকিস্তানে ভূমিকম্প হয়েছে। এরপর ফের সোমবার সকাল ১১টা ১২ মিনিটে কেঁপে ওঠে পাকিস্তান। এই নিয়ে পর পর তিন দিন ভূমিকম্পের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেদেশে। এনসিএস জানিয়েছে, সোমবারের ভূমিকম্পের অবস্থান ছিল ৩০.৫১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৭০.৪১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায়। আফগানিস্তান সীমান্ত থেকে এটি বেশ কাছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অগভীর ভূমিকম্প বেশি বিপজ্জনক। কারণ, মাটির নিচে কম গভীরতায় ভূমিকম্প হলে সেক্ষেত্রে শকওয়েভের(কম্পন তরঙ্গ) যাত্রাপথও কম হয়। ফলে আরও তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে।
পাকিস্তান এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ। দেশ মাঝ বরাবর একাধিক অ্যাকটিভ ফল্ট লাইন রয়েছে। বালুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া ও গিলগিট-বালতিস্তান প্রদেশ ইউরেশিয়ান প্লেটের দক্ষিণ সীমানায় অবস্থান করছে। অন্যদিকে ভারতীয় প্লেটের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে সিন্ধ ও পঞ্জাব প্রদেশ।
এই দুই বিশাল প্লেট মাঝেমধ্যেই একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়। সেই সংঘর্ষ থেকেই ভূমিকম্প হয়। ফলে পাকিস্তানের বহু এলাকায় নিয়মিত ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
ইতিহাস বলছে, এর আগে ১৯৪৫ সালে বালুচিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৮.১। সেবার হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। সিন্ধ অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে কম ভূমিকম্প হয়।
ইতিমধ্যেই সোমবারের ভূমিকম্পের বিষয়ে নাগরিকদের সতর্ক থাকার সুপারিশ করেছে প্রশাসন। ভূমিকম্পের আফটার শকের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণেই সকলকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে।
সিসমোলজিস্টরা গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। তাঁদের মতে, পাকিস্তানের ভৌগোলিক অবস্থানই এমন যে, ভবিষ্যতেও এই ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে। তাই সতর্ক থাকাই একমাত্র উপায়।