জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত কঠোর অবস্থান নিয়েছে। কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানাগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে এবং তাদের খোঁজে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপের সরাসরি প্রভাব পাকিস্তানে দেখা যাচ্ছে এবং তারা বড় ধরনের সামরিক অভিযানের আশঙ্কা শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে পাকিস্তানও। পাক অধিকৃত কাশ্মীর (POK) প্রশাসন জরুরি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি ও বদলি অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
২৫ এপ্রিল ঝিলাম ভ্যালি প্রশাসনের জারি করা একটি নির্দেশে জরুরি পরিস্থিতি উল্লেখ করা হয়েছে। সমস্ত হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য় কর্মীদের তাঁদের নিজের নিজের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে যে কোনও কর্মচারীকে ছুটি বা বদলির অনুমতি দেওয়া হবে না। সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি আদেশে যা লেখা আছে, 'দেশের জরুরি পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে জেলা সদর হাসপাতালের পাশাপাশি জেলার সকল চিকিৎসা কেন্দ্রে যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় ডাক্তার, প্যারামেডিক্যাল কর্মী এবং অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সর্বদা প্রস্তুত রাখতে হবে। এছাড়াও, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সকল মেডিকেল অফিসার/প্যারামেডিক্যাল কর্মী যারা ইতিমধ্যেই ছুটিতে আছেন, তাঁদের ছুটি বাতিল করতে হবে এবং কর্মস্থল ত্যাগ করার আগে অফিস থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। যদি কেউ এই নির্দেশ না মানে তাহলে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার/প্যারামেডিক্যাল চিকিৎসা কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।'
পাক অধিকৃত কাশ্মীর প্রশাসনের এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলিও এই 'জরুরি আদেশ'কে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছে অস্বাভাবিক সামরিক বা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বাড়তে পারে। বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ে সামনের এলাকাগুলিতে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁও এবং আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা এবং জঙ্গি কার্যকলাপ পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী পহেলগাঁও ও অনন্তনাগ জেলায় টহল নজরদারি জোরদার করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশেষ নজরদারি বজায় রাখছে। বিশেষ করে ঝিলম উপত্যকার সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে।