ভ্লাদিমির পুতিনবৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতে এসেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি দুই দিনের জন্য ভারত সফরে এসেছেন। আর এই সফরের আগেই তিনি এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ দিয়েছেন আজতক-এর ম্যানেজিং এডিটর অঞ্জনা ওম কাশ্যপ এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স এডিটর গীতা মোহনকে। তিনি সেই সাক্ষাৎকারে অমরত্ব থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যব্যবস্থা, জেন জি আন্দোলন সহ একাধিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি এই সাক্ষাৎকারে জানান, সব শেষ হয়ে যাবে। শুধু ভগবানই অমর।
সাক্ষাৎকারটি নেওয়ার সময় গীতা মোহন পুতিনকে প্রশ্ন করেন, 'আপনি এই মাত্র স্বাস্থ্যের বিষয়ে কথা বললেন। আপনার এবং রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর মধ্যে একটা হট মাইক মোমেন্ট ছিল। যেখানে আপনি লম্বা জীবন, মেডিসিনে উন্নতি এবং বায়োহ্যাকিং-এর মতো বিষয়ে কথা বলছিলেন। সেই বিষয়টা নিয়ে অনেক চর্চা হয়। আপনার কি মনে হয়, সত্যিই অমরত্ব পাওয়া সম্ভব?'
এই প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি বিজ্ঞানের দ্বারা দীর্ঘজীবন পাওয়া সম্ভব। সত্যিই সম্ভব, আমরা পারব। এটা সত্যি। যদিও সবকিছুরই একটা শেষ রয়েছে। শুধু ভগবানই সবসময় থেকে যাবেন।'
উনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, '৭৭ বছর আগে ভারতের মানুষের গড় বয়স ছিল ৩১। আর এখন সেটা ৭০ বছর।'
তিনি জানান, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নতির জন্য ভারতে শিশু মৃত্যুর হার ৪ গুণ কমেছে। এটা স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নতির জন্যই শুধু সম্ভব হয়েছে। আমি ভারতকে এই জন্য শুভেচ্ছা জানাই।
পাশাপাশি তাঁর মতে, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এআই এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার হলে তার দারুণ ফল মিলবে। তবে তারপরও সবকিছুর একটা শেষ রয়েছে বলে জানান তিনি।
জেন জি প্রসঙ্গ
এই সাক্ষাৎকারেই অঞ্জনা ওম কাশ্যপ পুতিনকে জিজ্ঞেস করেন, 'আপনার বয়স নিয়ে মন্তব্য না করেই বলছি, দুনিয়াজুড়ে চলছে জেন জি প্রোটেস্ট। আপনি যুদ সমাজের সঙ্গে কীভাবে কানেক্ট করেন? আজ এমন অনেক নেতা রয়েছেন, যাদের বয়স কম দেখা যায়। এটা কীভাবে হয়? আপনিই বা রাশিয়ার যুবদের সঙ্গে কানেক্ট করেন কীভাবে?'
এই বিষয়ে পুতিন বলেন, 'এটা নতুন কিছু নয়। সাহিত্য এবং ইতিহাস বারবার নতুন এবং পুরনো প্রজন্মের দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলেছে। ছেলে এবং পিতার দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলেছে। এটা চিরকালই ছিল। সবাইকে মাথায় রাখতে হবে, এটা নতুন কিছু নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আপনি জানেন কোনটা নতুন? প্রযুক্তি হল নতুন। মেসেঞ্জার, টেলিগ্রাম ইত্যাদি... যেগুলি নতুন প্রজন্মকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জেনারেশনের সকলেই মোটামুটি মোবাইল ব্যবহার করে এবং কিছুটা রেডিক্যাল। নতুন প্রজন্ম মনে করে, তারাই হল সেই প্রজন্মযাদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। তাদের আগে কারও সঙ্গে মনটা হয়নি। এটাই তারা দেখে এবং আশপাশের সবাইকে জানায়।'
মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যুবকেরা কি কট্টর?
পুতিন বলেন, 'তারা মনে করে এটার সঙ্গে খুব সহজেই ডিল করা যায়। সমস্যার সহজেই সমাধান করা যায়। কিন্তু যখন একজন মানুষ বুদ্ধিমান হয়ে ওঠেন, তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, খুব সহজে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।'
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মনে করেন, নেতাদের সবসময় নতুনদের সঙ্গে কাজ করা উচিত। আর নেতারা যেন কখনই নতুন প্রজন্মকে না বলেন, 'তোমরা নতুন। তোমরা কিছু বোঝো না।' তাঁর মতে, নতুন প্রজন্মের পাশে থাকতে হবে। তাদের মতো করেই তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হবে। ফিডব্যাক নিতে হবে। তিনি মনে করেন, ভারতে এই কাজটা ঠিকঠাকই চলছে।