ইজরায়েল দেশে ৭ অক্টোবর যে রক্তপাত হয়েছিল তার প্রতিশোধ নিল। গত ৯ মাস ধরে প্রতিশোধের আগুনে পুড়তে থাকা ইজরায়েল বুধবার ভোররাতে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করেছে। চমকপ্রদ বিষয় হলো, হানিয়াকে গাজা, প্যালেস্তাইন বা কাতারে হত্যা করা হয়নি, ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যা করা হয়েছে। হামাস নিজেই তাদের প্রধানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে।
বস্তুত, হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এ সময় হানিয়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গেও দেখা করেন। পরের দিন (বুধবার) অর্থাৎ আজ ভোরে ইসমাইল হানিয়া যে বাড়িটিতে অবস্থান করছিলেন ইজরায়েল তা উড়িয়ে দেয়।
নিহত হন হানিয়ার দেহরক্ষীও
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে হামলাটি তেহরানে হানিয়ার গোপন আস্তানায় করা হয়েছে। এতে হামাস প্রধানের সঙ্গে তার এক দেহরক্ষীও নিহত হয়। এই ঘটনার ঠিক একদিন আগেই হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া তেহরানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
হামাস প্রধান হানিয়া দোহায় থাকতেন
প্যালেস্তাইন সংগঠন হামাসের অনেক ইউনিট রয়েছে, যারা রাজনৈতিক, সামরিক বা সামাজিক কাজ পরিচালনা করে। একটি কনসালটেন্ট সংস্থা হামাসের নীতি নির্ধারণ করে। এর সদর দফতর গাজা স্ট্রিপ এলাকায়। এখন পর্যন্ত হামাসের নেতৃত্ব ছিল ইসমাইল হানিয়ার হাতে, যিনি এর চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২০১৭ সাল থেকে খালিদ মেশালের উত্তরসূরি হিসাবে এই কাজটির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনি কাতারের রাজধানী দোহায় থাকতেন এবং সেখান থেকে হামাসের কাজ দেখাশোনা করতেন। উল্লেখ্য, মিশর তার গাজা ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছিল।
তিন ছেলেও নিহত হয়
সম্প্রতি (এপ্রিল ২০২৪), হানিয়ার তিন ছেলেও ইজরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়। গাজা উপত্যকায় বিমান হামলায় হানিয়ার তিন ছেলেকে হত্যা করেছিল ইজরায়েল। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফ বলেছিল যে হানিয়ার তিন ছেলে আমির, হাজেম এবং মোহাম্মদ গাজায় জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালাতে যাচ্ছিল, তিনজনই বিমান হামলার শিকার হয়েছিল।
৭ অক্টোবর কী ঘটেছিল?
উল্লেখ্য যে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। তারপর হামাস ইজরায়েল আক্রমণ করে, যাতে ১২০০ জন নিহত হয়। হামাস ২৫০ অসামরিক নাগরিককে অপহরণ করেছিল। হামাসের হেফাজতে এখনো দেড়শ অপহৃত রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হামাস দাবি করেছে, ইজরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩৯ হাজারের বেশি প্যালেস্তাইন অসামরিক নাগরিক মারা গেছে। ইজরায়েল বলছে যে তারা এই অভিযানে হামাস ও তার সহযোগীদের ১৪ হাজারেরও বেশি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।