শনিবার আমেরিকার সব ক'টি রাজ্যে রাস্তায় নামলেন হাজার হাজার মানুষ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ও তার বিতর্কিত নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে। ‘Hands Off!’ নামে পরিচিত এই প্রতিবাদ ছিল বিরোধী শিবিরের সবচেয়ে বড় সংগঠিত কর্মসূচি।
১,২০০-রও বেশি জায়গায় প্রতিবাদ
এই প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছিল দেশের ৫০টি রাজ্যের ১,২০০-র বেশি জায়গায়। ১৫০-রও বেশি সংগঠন এই প্রতিবাদে সমর্থন জানায়। এর মধ্যে ছিল সিভিল রাইটস গ্রুপ, শ্রমিক সংগঠন, LGBTQ+ অধিকারকর্মী, প্রাক্তন সেনা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সক্রিয় সংগঠন।
কেন ‘Hands Off!’ আন্দোলন?
এই আন্দোলন ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক এমন কিছু সম্পদ ও সুবিধা কেড়ে নিচ্ছেন, যেগুলি তাঁদের প্রাপ্য নয়। এই আন্দোলনের মূল ইস্যুগুলি হল—
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সংখ্যা কমানো
স্বাস্থ্য পরিষেবায় কাটছাঁট
ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারে হস্তক্ষেপ
অভিবাসীদের উপর দমননীতি ও গণ বহিষ্কার
দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঢেউ
ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মল, নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন এবং বোস্টনের কমন পার্ক- সব জায়গাতেই মানুষ পথে নামেন। সিয়াটলে প্রতিবাদীরা ‘Fight the oligarchy’ লেখা পোস্টার হাতে রাস্তায় নেমে আসেন।
Bravo my fellow Americans pic.twitter.com/dzZ1fVS22A
— Michelle 🇺🇸🦅 (@Michell71078349) April 5, 2025
মিয়ামিতেও শনিবার রাস্তায় স্লোগান ওঠে— প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের নীতির বিরুদ্ধে। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সরকারি কর্মীদের বরখাস্ত ও দুর্বল শ্রেণির নিরাপত্তা সীমিত করার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ জনতা।
ইলন মাস্ক, যিনি এখন ‘Department of Government Efficiency’-র প্রধান ও ট্রাম্পের উপদেষ্টা, তাঁর বিরুদ্ধেও এই আন্দোলনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মাস্ক কর্পোরেট স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছেন, সাধারণ আমেরিকানদের নয়।
LGBTQ+ অধিকার নিয়ে উদ্বেগ
ন্যাশনাল মলের সভায় Human Rights Campaign-এর প্রেসিডেন্ট কেলি রবিনসন বলেন, এই হামলা শুধু রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগতও। এতে পরিবার ও কমিউনিটি সরাসরি আক্রান্ত হচ্ছে।
বোস্টনে সোশ্যাল সিকিউরিটি নিয়ে স্লোগান
বোস্টনে আন্দোলন হয় সোশ্যাল সিকিউরিটি কাটছাঁটের প্রতিবাদে। পোস্টারে লেখা ছিল— ‘Hands off our democracy’, ‘Hands off our Social Security’। শহরের মেয়র মিশেল উ-ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, তিনি চান না তাঁর সন্তান এমন এক সমাজে বড় হয়ে উঠুক, যেখানে সরকার হুমকি ও বিভাজনের কৌশল ব্যবহার করে।
হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া
প্রতিবাদে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোশ্যাল সিকিউরিটি, মেডিকেয়ার ও মেডিকেইড রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। পাশাপাশি দাবি করেছে, এই পরিষেবাগুলি নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থানই দেশের আর্থিক অবনতির কারণ।
২০১৭-র পর সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ
ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর দেশজুড়ে একাধিক প্রতিবাদ হয়েছে। তবে শনিবারের এই আন্দোলন ছিল ২০১৭-র ‘Women’s March’ ও ২০২০-র ‘Black Lives Matter’ আন্দোলনের পর সবচেয়ে বড় কর্মসূচি।