ফের ট্রেড যুদ্ধের জল্পনা উস্কে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি ১ জুন থেকে নতুন টেক ট্যারিফের ঘোষণা করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি করা সমস্ত পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি নয় এমন সমস্ত স্মার্টফোনের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। যার মধ্যে অ্যাপলের আইফোনও রয়েছে। তার এই বক্তব্যের পর বিশ্ববাজারে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউকে নিশানা করে বলেন, ট্রেড আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছে না। ইইউকে অন্যায্য আচরণের জন্য অভিযুক্ত করেন। পাশাপাশি ইউরোপে আমেরিকান পণ্য নিষিদ্ধ করার জন্য জোর দেন।
অ্যাপলের প্রতি ট্রাম্পের সতর্কবার্তা
ট্রাম্প অ্যাপলকে সতর্ক করেছিলেন, তাদের দেশেই আইফোন তৈরি করতে হবে। অন্যথায়, তাদের নতুন শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। ট্রাম্প বলেন, তিনি অনেক আগেই অ্যাপলের সিইও টিম কুককে বলেছিলেন, অ্যাপেলের উৎপাদন আমেরিকায় হওয়া উচিত।
ভারতে অ্যাপেল কারখানা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ট্যারিফ ছাড়া অ্যাপেল বিক্রি করা যাবে না। যদি তারা আমেরিকায় আইফোন বিক্রি করতে চায়, তাহলে এটি আমেরিকায় তৈরি হোক, এমন হুঁশিয়ারিও দেন।
চিনা শুল্ক এড়াতে অ্যাপল বর্তমানে তার আইফোন অ্যাসেম্বলির বেশিরভাগ অংশ ভারতে স্থানান্তর করছে, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থানান্তরের কোনও পরিকল্পনা নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন তৈরি করলে দাম শত শত থেকে হাজার হাজার ডলার বেড়ে যাবে।
ট্রাম্প পরে স্পষ্ট করে বলেন, স্মার্টফোনের শুল্ক ব্যাপকভাবে অ্যাপল, স্যামসাং এবং জুনের শেষ নাগাদ আরোপিত হতে পারে এমন যেকোনও বিদেশী ফোনের উপর আরোপ করা হবে।
গত বছর, ইইউ ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে জার্মানি, আয়ারল্যান্ড এবং ইতালি এগিয়ে রয়েছে। ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে গাড়ি, ওষুধ এবং বিমানের মতো পণ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে, যার ফলে আমেরিকান উপভোক্তাদের জন্য খরচ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইইউ বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকোভিচ শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। পারস্পরিক শ্রদ্ধার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক শোফে বলেছেন যে শুল্ক হুমকি আগেও মার্কিন আলোচনার কৌশলের অংশ ছিল।
বিশ্ববাজারে অস্থিরতা
ট্রাম্পের বক্তব্যের পর বিশ্ব বাজারে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আমেরিকান এবং ইউরোপীয় স্টকগুলির দাম কমেছে। বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের মধ্যে ট্রেজারি কমে গেছে এবং সোনার দাম বেড়েছে। এছাড়াও, অ্যাপলের শেয়ার ৩ শতাংশ কমেছে।