রাষ্ট্র সংঘে বড় পদক্ষেপ নিল ভারত। প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাবে সমর্থন জানাল নয়াদিল্লি। শুক্রবার রাষ্ট্র সংঘের সাধারণ পরিষদে ফ্রান্সের আনা প্রস্তাবে ভারত ভোট দেয়। মোট ১৪২টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে দাঁড়ায়। ১০টি দেশ এর বিরোধিতা করে। ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
প্রস্তাবের নাম ছিল ‘Endorsement of the New York Declaration on the Peaceful Settlement of the Question of Palestine and the Implementation of the Two-State Solution’। এই ঘোষণাপত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ সমাধান ছাড়া প্যালেস্তাইন-ইজরায়েল সংঘাত থামবে না। গাজায় যুদ্ধও বন্ধ করতে হবে অবিলম্বে।
ঘোষণাপত্রে কী বলা হয়েছে?
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, হিংসা-রক্তপাত বন্ধ করে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ। গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক মিলিয়ে একটি স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। সেখানে কোনও দখলদারি, অবরোধ বা জোরপূর্বক উচ্ছেদ চলবে না।
হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলার নিন্দা করা হয়েছে। সেই হামলায় ইজরায়েলে ১,২০০ জন নিহত হন, ২৫০ জনেরও বেশি জিম্মি হন। তবে ঘোষণাপত্রে ইজরায়েলের পাল্টা অভিযানেরও সমালোচনা করা হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার হাসপাতাল, স্কুল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। খাদ্য ও জলের ঘাটতিতে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।
ভারতের অবস্থান বদল
গত তিন বছরে গাজার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে একাধিকবার ভোটদানে বিরত ছিল ভারত। এর জন্য সমালোচিতও হতে হয়। কিন্তু এবার ভোটে সমর্থন দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত।
কারা বিরোধিতা করল?
প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ইজরায়েল, আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, পাপুয়া নিউ গিনি সহ ১০টি দেশ। ইজরায়েলের বক্তব্য, রাষ্ট্র সংঘের সাধারণ পরিষদ 'বাস্তব থেকে বিচ্ছিন্ন ও রাজনীতি চালিত'। ঘোষণাপত্রে কোথাও হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলা হয়নি কেন? সেই প্রশ্নও তুলেছে তারা।
আমেরিকার তরফে জানানো হয়েছে, 'এই প্রস্তাব হামাসের জন্য আশীর্বাদ ছাড়া কিছুই নয়।' ওয়াশিংটনের মতে, এটি নিছক রাজনৈতিক খেলা।
রক্তাক্ত পরিসংখ্যান
গাজার স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ মানুষ।