রাশিয়ার থেকে বিপুল পরিমাণে খনিজ তেল কেনে ভারত। আর তাতেই গোঁসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এই ইস্যুতেই ভারতকে 'জরিমানা' করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বসান চড়া শুল্ক। কিন্তু রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চিন। তাদের ক্ষেত্রে মুখে কুলুপ এঁটেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এবার আমেরিকার সেই দ্বিচারিতাই তুলে ধরলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বলেন, 'তেল নিয়ে ইস্যু হচ্ছে। অথচ রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক চিনের উপর কোনও শুল্কই আরোপ করা হয়নি। ভারতের বেলায় যে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, তা চিনের বেলায় খাটে না কেন?'
ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ইউরোপ ও আমেরিকা কার্যত রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যদিও সস্তায় খনিজ তেল ক্রয়ের সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ভারত। এক ধাক্কায় রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়ায় নয়াদিল্লি। এহেন পরিস্থিতিতে বেজায় অসন্তুষ্ট হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলি। এই বিষয়ে এস জয়শঙ্কর বলেন, 'যদি আপনার নিজের রাশিয়ার থেকে তেল কিনতে কোনও সমস্যা থাকে, তাহলে কিনবেন না।'
ভারত রাশিয়ার তেল কিনছে কেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার তেল কেনার ফলে আদতে ভারতের লাভই হচ্ছে। এর আগে এই বিষয়ে মূলত মধ্যপ্রাচ্যের উপরই নির্ভরশীল ছিল ভারত। কিন্তু সেই সময়ে তেলের দাম অনেকটাই বেশি ওঠা নামা করত। রাশিয়ার উপর তেল নিষেধাজ্ঞা চাপার পর কিছুটা চাপেই পড়েছিল মস্কো। সেই সুযোগে কম দামে তেল কেনা বাড়িয়ে দেয় ভারত। তার ফলে লাভও হয়েছে। আগের তুলনায় খনিজ তেলের দাম স্থিতিশীল হয়েছে। মার্কিন চোখরাঙানির মুখেও সেই সুযোগ ছাড়তে নারাজ নয়াদিল্লি।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে চড়া শুল্ক আরোপ করছে? সেই বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আলোচনার মধ্য়েই আছি। তবে আমাদের কিছু 'রেড লাইন' আছে। এটা এমনই একটি বিষয় যেখানে আপোস করা সম্ভব নয়।' এরপর বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'কেউ যদি এই বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন, তাহলে তাদের একথা স্বীকার করে নেওয়া উচিত যে, তাঁরা কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করতে প্রস্তুত নন।'
ফলে এটা ধরে নেওয়াই যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি, শুল্ক শাস্তি উপেক্ষা করেই, আগের মতোই রুশ তেলের আমদানি জারি রাখবে ভারত। এহেন প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কী হয়, সেটাই দেখার।